বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পানির দাম এক লাফে তিন গুণ হচ্ছে রাজশাহীতে

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২২:১৪

এতদিন আবাসিক সংযোগে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। তা বেড়ে হচ্ছে ৬ টাকা ৮১ পয়সা। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে হাজার লিটার পানির মূল্য ধরা হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। এখন এই পানির দাম ৪ টাকা ৫৪ পয়সা।

রাজশাহীতে বাড়ানো হচ্ছে ওয়াসার পানির দাম, এক লাফে তিন গুণ।

রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশণ কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন দাম কার্যকর করবে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতি এক হাজার লিটার পানি উত্তোলন, পরিশোধন ও সরবরাহে ওয়াসার খরচ হয় ৮ টাকা ৯০ পয়সা, কিন্তু তা সরবরাহ করা হয় অনেক কম দামে। এ কারণে বিপুল পরিমাণ লোকসান হয় সরকারি সংস্থাটির। তাই দাম বাড়িয়ে লোকসান কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এতদিন আবাসিক সংযোগে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। তা বেড়ে হচ্ছে ৬ টাকা ৮১ পয়সা। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে হাজার লিটার পানির মূল্য ধরা হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। এখন এই পানির দাম ৪ টাকা ৫৪ পয়সা।

অর্থাৎ সব ক্ষেত্রেই পানির দাম বাড়ছে তিন গুণ।

এক লাফে দাম তিনগুণ দাম বাড়ানোর সমালোচনা করেছেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওয়াসা এখন পর্যন্ত আমাদের সুপেয় পানিই নিশ্চিত করতে পারেনি। পানি পানের উপযোগী নয়। পানির মান ঠিক করার আগেই দাম বৃদ্ধি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এর প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দেয়া হতে পারে।’

রানীবাজার এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমানও ওয়াসার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘এক সঙ্গে এতটা বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আমরা কোনোভাবেই মানতে পারি না। এটা অযৌক্তিক।’

আবুল কাশেম নামে আরেক শহরবাসী বলেন, ‘ওয়াসা বাণিজ্যিক কোনো প্রতিষ্ঠান না। এটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। লাভ-ক্ষতির বিষয়কে সবার আগে গুরুত্ব দেয়ার কথা নয় তাদের। তারা মানুষকে এখনো ভালো পানি সরবরাহই দিতে পারছে না অথচ পানির দাম বাড়াচ্ছে।’

তবে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের অন্যান্য স্থানে পানির মূল্য এর চেয়েও বেশি। উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের মূল্য বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।’

একবারে তিনগুণ দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গুণ হিসেবে নয়। অনেক আগে এখানকার পানির দাম বেড়েছিল। সেটি ৬/৭ বছর আগে। ব্যয় এবং আনুসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করেই দাম বাড়ানো হচ্ছে।

‘যৌক্তিভাবেই যেটা হওয়া দরকার সেটাই করা হয়েছে। বরং যে ব্যয় হচ্ছে সেই তুলনায় বাড়ানো হয়নি। দেশের অন্য ওয়াসার তুলনায় দাম এখন কম রয়েছে।’

ওয়াসার পানির মান ভালো দাবি করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘মানুষ পান করছে, ব্যবহার করছে। কোনো মানুষ অসুস্থ হওয়ার খবর আমরা পাইনি এখন পর্যন্ত। তবে পাইপ সিস্টেমে যেহেতু পানিটা সররবাহ হয়। অনেক সময় ময়লা ঢুকে যাবার খবর পেলে আমরা দ্রুত সমাধান করে দিই।’

মিটার না থাকলে বিল কত

আবাসিক ও বাণিজ্যিক যেসব সংযোগে মিটার নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে সংযোগ পাইপের ব্যস এবং ভবনের তলার ওপর নির্ভর করে মূল্য বাড়ানো হচ্ছে।

আবাসিকে আধা ইঞ্চি পাইপে নিচতলার জন্য মাসে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা এবং ১০ তলার জন্য ৮২৫ টাকা মূল্য ধরা হবে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৩৭৫ টাকা এবং ১০ তলায় ২ হাজার ৭০ টাকা।

দ্বিতীয় থেকে নবম তলা পর্যন্ত কিংবা ১০ তলার ওপরের তলার জন্য পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

যে কোনো আবাসিক ভবনে দেড় ইঞ্চি পাইপে ৫ হাজার ৬২৫ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ৭ হাজার ৫০০, ৩ ইঞ্চিতে ৯ হাজার ৩৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ১১ হাজার ২৫০ টাকা ধরা হয়েছে।

বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে নিচতলায় আধা ইঞ্চি পাইপে মাসিক ৩০০ টাকা এবং দশতলায় ১ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্য ধরা হয়েছে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৭৫০ টাকা এবং ১০ তলায় ৪ হাজার ১৪০ টাকা ধরা হয়েছে।

দ্বিতীয় থেকে নবম এবং ১০ তলার ওপরের তলার জন্য বিল বাড়বে আনুপাতিক হারে।

বাণিজ্যিকে দেড় ইঞ্চি পাইপের জন্য ১১ হাজার ২৫০ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ১৫ হাজার, ৩ ইঞ্চিতে ১৮ হাজার ৭৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ২২ হাজার ৫০০ টাকা ধরা হয়েছে।

রাজশাহীতে আগে সিটি করপোরেশনের পানি শাখার মাধ্যমে পানি সরবরাহ দেওয়া হতো। ২০১০ সালের ১ আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা।

১০৩টি গভীর নলকূপে পানি উত্তোলন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এসব নলকূপে প্রতিদিন সাড়ে ৯ কোটি লিটার পানি তোলা হয়।

এই পানি সরবরাহে শহরে প্রায় ৭১২ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর