বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাকরি হারিয়ে গ্রামে ফেরাদের ঋণ তহবিল: সার্কুলার জারি

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:৪৩

২০২০ সালের এপ্রিলে দেশে করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ৩০টির মতো প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে। তবে যারা চাকরি হারিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য এটাই প্রথম উদ্যোগ।

করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়া জনগোষ্ঠীর জন্য ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল চালু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ৬ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে। একেকজন সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।

২০২০ সালের এপ্রিলে দেশে করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ৩০টির মতো প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছে। তবে যারা চাকরি হারিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য এটাই প্রথম উদ্যোগ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে সোমবার এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

তহবিলের নাম দেয়া হয়েছে ‘কোভিড-১৯ মহামারি ও অন্যান্য কারণে গ্রামে ফিরে যাওয়া জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে গঠিত ঘরে ফেরা বিষয়ক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম।'

ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলোর মাধ্যমে এই ঋণ বিতরণ করা হবে। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে ৬ শতাংশ সুদে বিতরণ করবে।

ঋণের সীমা

এই তহবিল থেকে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। যারা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেবেন, তাদের তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাসের মধ্যে পরিশোধের সুযোগ দেয়া হবে।

ঋণের পরিমাণ দুই লাখের অধিক থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে হলে ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের মেয়াদ হবে দুই বছর। এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাদের কোনো ধরনের জামানত দিতে হবে না।

পুনঃঅর্থায়নের এই প্রকল্প শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর। তবে পরবর্তী সময়েও ঋণ আদায় প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

কোন খাতে ও কারা পাবেন ঋণ

ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট আটটি খাত নির্বাচন করেছে। এগুলো হচ্ছে- স্থানীয় ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসা, পরিবহন খাতে ছোট আকারের যানবাহন ক্রয়, হালকা প্রকৌশল, মৎস্য ও পশুসম্পদ, তথ্যপ্রযুক্তির জন্য সেবাকেন্দ্র (সার্ভিস সেন্টার) স্থাপন ও অন্যান্য সেবা উৎসারী কর্মকাণ্ড, ফল ও শাকসবজি আবাদ, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং ঘর নির্মাণ ও মেরামত।

এ ছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করে এমন কর্মকাণ্ড যেমন ছোট ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে ধান ভাঙানো, চিড়া/মুড়ি তৈরি, নৌকা কেনা, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন কেনা, কৃত্রিম গহনা তৈরি, মোমবাতি তৈরি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এমন ক্ষেত্রে ঋণ দেয়া যাবে।

ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলো থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে নারী ঋণ উদ্যোক্তাদের ন্যূনতম ১০ শতাংশ ঋণ দিতে হবে।

ঋণ গ্রহণকারী খেলাপি না হলে ঋণ পরিশোধের পর পুনরায় নতুন ঋণ নিতে পারবে। এ খাতের ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরোনো ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

অংশগ্রহণকারী ব্যাংক

পুনঃঅর্থায়নের এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কোনো ধরনের অংশগ্রহণমূলক চুক্তি করতে হবে না। তবে বেসরকারি কিংবা বিদেশি ব্যাংক ও এনজিওগুলোর ঋণ বিতরণের জন্য চুক্তিতে সই করতে হবে।

ব্যাংকগুলোর কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা, বিতরণের সক্ষমতা এসবের ভিত্তিতে তহবিল বরাদ্দ করা হবে।

অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্ক অর্থাৎ শাখা, উপশাখা, এজেন্ট, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও আদায় করতে পারবে।

পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যাংকগুলোকে সার্কুলার জারির পরবর্তী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘কোভিড-১৯ মহামারির কারণে শহরকেন্দ্রিক জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মজীবী মানুষকে হঠাৎ কাজ হারিয়ে গ্রামাঞ্চলে ফিরে যেতে হয়েছে। তাদের অধিকাংশই এখন গ্রামে অবস্থান করছেন এবং মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ সুবিধার আওতায় এসব জনগোষ্ঠীকে আনা প্রয়োজন। অন্যথায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর জন্য গ্রামেই উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামাঞ্চলে আয় উৎসারী কর্মকাণ্ড অধিকতর গতিশীল করার লক্ষ্যে স্বল্প সুদে প্রয়োজনীয় ঋণ প্বাহ নিশ্চিত করা আবশ্যক।’

এই পরিস্থিতি ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচির অধীনে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের জন্য পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে তাদের এই তহবিল থেকে ঋণ দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর