রাজধানীর হলি ফ্যামিলি মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলায় প্রতিষ্ঠানটির সহকারী অধ্যাপক ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরীর জামিন আবেদন নাকচ করেছে আদালত।
সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে থাকার আদেশ দেয়।
সোমবার ডা. সালাউদ্দিনের অনুপস্থিতিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ঢাকা বারের সভাপতি আবদুল বাতেন ও বিলাসী সরকার জামিন শুনানি করেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর ডা. সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সোমবার তার জামিন আবেদন নাকচ হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারেই থাকছেন।
শুনানিতে ঢাকা বারের সভাপতি আবদুল বাতেন বলেন, ‘মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে ডা. সালাউদ্দিন মোটেও জড়িত না। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি একজন ডাক্তার। হলি ফ্যামিলির রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজে ফার্মাকোলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ১২ বছর সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করছেন। তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক। জামিন দিলে পলাতক হবেন না।’
যেকোনো শর্তে তাকে জামিন দেয়ার জন্য আদালতের কাছে প্রার্থনা করেন এই দুই আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে রমনা থানার (নারী-শিশু) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক মকবুলুর রহমান জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে আদেশ দেয় বলে নিউজবাংলাকে জানান মকবুলুর রহমান।
এর আগে ২৮ ডিসেম্বর রমনা থানায় ডা. সালাউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ছাত্রী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন চৌধুরী গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর মেসেঞ্জারে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় এক শিক্ষাবর্ষে অনেক বছর আটকে রাখার হুমকি দেন সালাউদ্দিন চৌধুরী। এরপর কলেজে বিভিন্নভাবে ডেকে তার দেয়া মেসেজ ফোন থেকে মুছে ফেলতে এবং তার সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করতে বলেন।
‘এর আগে ওই শিক্ষক কলেজে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে দুই দফায় ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেন, কিন্তু পড়াননি। পড়ার জন্য বারবার তার বাসায় যেতে বলেন। কিন্তু ওই ছাত্রী বাসায় যেতে রাজি হননি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হন। লোকলজ্জায় এত দিন কিছু না বললেও দিন দিন অ্যাকাডেমিক লাইফ চরম হুমকির মুখে পড়ে। ডা. সালাহউদ্দিন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে ওই ছাত্রীকে ভয় দেখান,’ উল্লেখ করা হয় মামলায়।
এসব অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী প্রথমে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ২৮ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রমনা থানায় মামলা করেন।