ঝালকাঠির সুগন্দা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মোহাম্মদ শেখ রাসেল নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭।
৩৮ বছর বয়সী রাসেল শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইনস্টিটিউটের সার্জন এস এম আইয়ুব হোসেন জানান, রাসেল নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শ্বাসনালি ১৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
রাসেল পরিবার নিয়ে রাজধানীর মুগদার সবুজবাগ এলাকায় থাকতেন। লঞ্চটিতে তিনিসহ তার পরিবারের ৯ জন সদস্য ছিলেন। তারা বরগুনায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন।
নিহতের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী জহুরা আক্তার ময়না কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমাগো আর কেউ রইল না, আমরা শেষ হয়ে গেছি।’
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় এখনও অনেক নিখোঁজ।
পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, লঞ্চটিতে অন্তত ৪০০ যাত্রী ছিল।
তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকের দাবি, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো।
নিহত রাসেলের ভাবি বলেন, ‘আমাদের পরিবার থেকে ৯ জন বরগুনা বেড়ানোর উদ্দেশে রওনা দেয়। ঘটনার পরের দিন দুপুরে টিভিতে দেখি ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন। পাগলের মতো খোঁজখবর নিই, কেউ কিছু বলতে পারে না। যারা বেড়াতে গেছে তারাও ফোন ধরে না, ফোন বন্ধ পাই।
‘পরে সংবাদ পাই আহত পোড়া রোগীরা ঢাকায় আসতেছে। রাসেলদেরও ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসতেছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা শেখ হাসিনা বার্নে চলে যাই। এসে কয়েকজনের সঙ্গে শুধু আমার ভাশুর রাসেলকে দেখতে পাই, ওদের দেখি না। তখনই ভাবলাম হয়তো তারা নেই।’
জহুরা জানান, বরগুনায় যাওয়ার উদ্দেশে অভিযান-১০ লঞ্চে চড়া তাদের পরিবারের ৯ সদস্যের মধ্যে রাসেলের দুই ছেলে জীবন ও ইমন ছিল, তারা নিখোঁজ। নানি, মামি, শ্যালকের মেয়ে, শ্যালকের স্ত্রী রুমা আক্তার অহনা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। রাসেলের স্ত্রী পুতুল, তার ভাই কালু বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।