বগুড়া সদরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত নাজমুল হাসান অরেঞ্জের স্ত্রী স্বর্ণালি আক্তার মামলা করেছেন। সোমবার দুপুরে করা মামলাটিতে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার রাতে গুলিবিদ্ধদের মধ্যে একজন হলেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সহসম্পাদক নাজমুল হাসান অরেঞ্জ। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আরেকজন হলেন একই সংগঠনের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির নেতা মিনহাজ হোসেন আপেল।
অরেঞ্জ মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার রেজাউল ইসলামের ছেলে। আপেল ডাবতলা এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
শহরের সেউজগাড়ি এলাকার ডাবতলা মোড়ে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রতিপক্ষের গুলিতে গুরুতর আহত হন তারা।
দুজনের মধ্যে অরেঞ্জের চোখের নিচে এবং আপেলের পেটে গুলি লেগেছে।
ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিউজবাংলাকে হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মিলটন সাহা বলেন, ‘অরেঞ্জের মস্তিষ্কে গুরুতর জখম হয়েছে। তার চোখ স্থির হয়ে গেছে এবং শরীরের কিছু অঙ্গ ঠিকমতো কাজ করছে না। যে কারণে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জেরে অরেঞ্জ ও আপেলকে গুলি করা হয়েছে। এর আগে রমজান ঈদের পর একবার হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলার শিকার গ্রুপটিই প্রতিশোধ নিতে এবার গুলি চালায় বলে জানান তিনি।
‘সোমবার সকালে পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা অভিযোগ দিতে চেয়েছেন। অভিযোগ পেলে রেকর্ড করা হবে।’
যারা গুলি চালিয়েছে তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
বগুড়া স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক খোরশেদ ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, অরেঞ্জ ও আপেল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মালগ্রাম ডাবতলার মোড়ে বসে কথা বলছিলেন। এ সময় মালগ্রাম বেলতলা মোড় থেকে ৪-৫টি মোটরসাইকেলে করে একদল যুবক ডাবতলা মোড়ের দিকে যায়। তাদের মধ্য থেকে দুজন অরেঞ্জ ও আপেলকে লক্ষ্য করে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এর মধ্যে অরেঞ্জের বাম চোখের নিচে একটি এবং আপেলের পেটে একটি গুলি লাগে।
স্থানীয় লোকজন জানান, তাদের উদ্ধার করে প্রথমে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেয়া হয়। অরেঞ্জের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়েছে।