বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ল ১০ গুণ

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২২ ২২:৪৯

পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র জানায়, ২০১০ সালে নেয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তৃতীয় সংশোধনীর চেয়ে ৬ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা খরচ বাড়িয়ে সবশেষ ধাপে চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে ২০১০ সালে নেয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মূল ব্যয় এক দশকে বেড়েছে সাড়ে নয় গুণের বেশি।

পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র জানায়, ২০১০ সালে নেয়া এ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তৃতীয় সংশোধনীর চেয়ে ৬ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা খরচ বাড়িয়ে সবশেষ ধাপে চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, মেয়াদ ও কাজের শেষ ধাপে এসে চতুর্থ সংশোধনীর প্রাথমিক খসড়ায় প্রকল্প ব্যয় তৃতীয় ধাপের চেয়ে সাত হাজার ৫৪০ কোটি টাকা বাড়িয়ে খরচ ১২ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা করার দাবি করা হয়েছিল।

পরে পরিকল্পনা কমিশনের পাঠানো সেই প্রস্তাবের ওপর মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। সভায় তা বাতিল হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নিয়ে তা থেকে ব্যয় ও সময় কমানো হয়।

প্রকল্পের নতুন ও চতুর্থ সংশোধনীটির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় তোলা হবে।

মঙ্গলবার শেরে-বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের এ সভা বসবে।

এদিকে সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে প্রকল্পের আকার ও সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে কয়েক গুণ।

বিভিন্ন ধাপে ব্যয় বাড়ার চিত্র

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সূত্র জানায়, ২০১০ সালে নেয়া এ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ২০৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। সময় বাড়ানো হয় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত।

দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণের বেশি বা ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা করা হয়। মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত।

তৃতীয় সংশোধনীতে এসে ব্যয় ১৪ কোটি টাকা কমে ৪ হাজার ৮২৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা করা হলেও সময় আরও তিন বছর বাড়ানো হয়।

সম্প্রতি চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় আরও ৬ হাজার ৩১৬ কোটি ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে ১৩১ শতাংশ।

শুরুতে মূল প্রকল্পটি ৭০০টি আশ্রয়ণ গ্রাম স্থাপনের মাধ্যমে ৫০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করার কথা ছিল।

পরে শহর এলাকায় টিনের ঘরের পরিবর্তে বহুতল ভবন নির্মাণ ও অন্যান্য সুবিধাসহ বাড়তি ৫০ হাজার পরিবারের পুনর্বাসনের কাজ এতে যুক্ত হয়।

তৃতীয় সংশোধনী পর্যন্ত সুবিধাভোগী আড়াই লাখে উন্নীত হয়। এখন তা প্রায় পাঁচ লাখে দাঁড়াচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ দেয়া নীতিমালা-২০২০ অনুসারে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এতে ভূমিহীন ও গৃহহীন ‘ক’ শ্রেণি এবং জমি আছে কিন্তু ঘর নেই এ রকম ‘খ’ শ্রেণির পরিবারসহ মোট ২ লাখ ৫০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন হবে।

এর সঙ্গে আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব হবে।

মেয়াদ ও কাজের শেষ ধাপে এসে আবারও ব্যয় বাড়ছে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে নেয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে।

ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র পরিবার পুনর্বাসন, ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণসহ তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প নেয়া হয়।

যাদের জমি আছে তাদের নিজ জমিতে ঘর বানিয়ে দেয়া এবং যাদের জমি ও নেই ঘরও নেই তাদের গুচ্ছ বসতির মাধ্যমে আবাসনের সংস্থান করা হয়। ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ধাপে প্রকল্পের আওতাও বেড়েছে।

কী রয়েছে প্রকল্পে

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে জমি, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি, বিদ্যুৎ ও চলাচলের জন্য পাকা রাস্তা ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা পাবে সুবিধাভোগীরা। এ ছাড়া পুনর্বাসিতদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা করে পেশাভিত্তিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

সর্বশেষ প্রস্তাব অনুসারে প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ হাজার ১৪৯টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৭৮টি সিআইসিট (টিন ও লোহা তৈরি ব্যবহার বেশি) ব্যারাক, ৪ হাজার ৩৯৩টি সেমিপাকা ব্যারাক, ৬০টি বহুতল ভবন, ১ হাজার ১২০টি কমিউনিটি সেন্টার, ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করা হবে।

এসব স্থাপনায় এ প্রকল্পে মোট ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। স্থাপনা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫৬৫টি ঘাটলা, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বক্স কালভার্ট, পাকা ড্রেন ও স্লোপ প্রটেকশনসহ অগভীর ও গভীর নলকূপ স্থাপনও স্থাপন করা হবে।

ব্যয় বাড়ার কারণ

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, তৃতীয় সংশোধনী অনুসারে প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি ৪ হাজার ৪৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাস্তব অগ্রগতি ৯৩ শতাংশ।

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই সঙ্গে ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা-২০২০’-এর আলোকে আবাসনের নির্দেশ দেন। এতে আশ্রয়ণে নির্মিত ঘরগুলো আরও টেকসই করতে প্রতিটি একক ঘরের ব্যয় ২ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা করা হয়।

আগে আড়াই লাখ আবাসনের কথা থাকলেও নতুন করে তা প্রায় পাঁচ লাখে উন্নীত করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরিবারের পুনর্বাসন, ব্যারাক মেরামতসহ অন্যান্য খাতেও ব্যয় বাড়ছে।

এ বিভাগের আরো খবর