রুগ্ণ শিল্পের দায়দেনা অবসায়নে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তবে নন-টেক্সটাইল খাতের কারখানা পায়নি এ বিশেষ সুবিধা। নিজেদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাঁচাতে রুগ্ণ শিল্পের এসব মালিক ঋণের দায়মুক্তি চেয়ে আবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন বিষয়ে রোববার এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা।
কারখানা মালিকরা জানান, ঋণের দায় নিয়ে নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে খেলাপি বিবেচনায় অর্থঋণ আদালতে মামলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান নন-টেক্সটাইল খাতের ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দায় অবসায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তাতে সংকটের সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় রুগ্ণ শিল্পের মালিকরা ঋণ দায়মুক্তির অনুরোধ জানিয়ে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিতে যাচ্ছেন।
২০০৯ সালে তৎকালীন সরকার রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন ও দায়দেনা নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল। টাস্কফোর্স রুগ্ণ শিল্পগুলোকে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ও নন-টেক্সটাইল এ তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে।
পরে টাস্কফোর্সের সুপারিশে সরকার ২৭৯টি গার্মেন্টস ও ১০০টি টেক্সটাইলের দায়দেনা অবসায়ন করে। তখন নন-টেক্সটাইল খাত নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানায়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপর দীর্ঘদিন ঝুলে আছে এ খাতের ব্যবসায়ীদের ভাগ্য।
দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রোববার রুগ্ণ শিল্পবিষয়ক এক সভা করে।
সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছাদেক উল্ল্যাহ চৌধুরী বলেন, ‘রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসনে ১৯৯৮ সালে মুন্সেফ কমিটি গঠন হয়েছিল। তখন ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। পরে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে এফবিসিসিআই নতুন করে রুগ্ণ শিল্পের ডাটাবেজ তৈরি করেছে। এ নিয়ে কাজ চলমান থাকলেও সবাইকে সুবিধা দেয়া সম্ভব হয়নি।’এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘রুগ্ণ শিল্পের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য এফবিসিসিআইতে একটি আলাদা ডেস্ক করা হবে। তালিকা করে রুগ্ণ শিল্পকে সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট সুরাহা করতে হবে।’কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ তাহমিন আহমেদ বলেন, ‘পোশাক ও বস্ত্র খাতের বাইরে থাকা রুগ্ণ কারখানার ঋণ দায়মুক্তির অনুরোধ করে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে। রুগ্ণ শিল্পের মালিকদের বাঁচাতে সবার সহায়তা দরকার।’সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, কো-চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন এ. ফেরদৌস, এম নজরুল ইসলাম, সরকার মো. সালাউদ্দিন, এ কে এম খোরশেদ আলম খানসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।