বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোগান্তি ও মোবাইল অ্যাকাউন্ট বিড়ম্বনা ভাতাভোগীদের

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:২৫

মাগুরার সমাসসেবা অফিসে ভোগান্তির শিকার এমন অন্তত পঁচিশজনকে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, অফিসে গেলেই কর্মকর্তারা তাদের চলে যেতে বলেন। ভুক্তভোগীদের কথা কেউ শোনেন না।

শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসাবে স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ভাতা পেতেন চম্পা। কিন্তু তিন বছর হলো, সেই ভাতা তিনি পাচ্ছেন না।

মাগুরা শহরের এশিয়া মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে সদ্য এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। এবার বড় প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষায় পড়াতে চান তার মা ডলি বেগম।

কিন্তু লোকাল বাসের সহাকারী বাবার যে আয় তাতে চম্পার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। তাই ভাতার টাকাটা তার খুব দরকার।

মেয়ে কেন ভাতা পায় না বা আদৌও তালিকায় নাম আছে কিনা তা এখন আর জানেন না ডলি বেগম। তাই মেয়েকে নিয়ে তিনি প্রায়ই মাগুরার সমাজসেবা ভবনে ধন্যা দেন। কিন্তু সেখান থেকেও কোনো জবাব মিলছে না।

প্রতিবন্ধী ভাতার বই হাতে চম্পা জানান, ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ার সময় প্রতিবন্ধী হিসাবে নিবন্ধীত হন তিনি। পরে প্রতি বছরই একাকালীন ভাতা পেতেন। তিন বছর ধরে সেই ভাতা আর পান না। ভাতা কেন বন্ধ হলো, তাও এখন অজানা।

মাগুরার সমাজসেবা ভবনে বয়স্ক ভাতা থেকে শুরু করে বিধবা ভাতা নিয়েও রয়েছে এমন নানা ভোগান্তি।

প্রতিদিন অনেকে আসেন কিন্তু কোনো কাজ হয় না। তাদের অভিযোগ, আগে তারা ব্যাংকে ভাতার টাকা পেতেন নিয়মিত। লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট হলেও ভাতাটা ঠিকঠাক পেতেন। কিন্তু মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার পর তাদের অনেকেই ঠিক মতো ভাতা পাননি গত ছয় মাস।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে শত বছর পাড়ি দেয়া আবুল বিশ্বাস ও তার ৮৫ বছর বয়সী স্ত্রী জাহিদা বেগমও রয়েছেন। সদরের আবালপুর দেড়ুয়া গ্রামে তাদের বাড়ি। দুজনই অসুস্থ হওয়ায় সমাজ সেবা অফিসে এসেছিলেন তাদের ছোট ছেলে পিন্টু বিশ্বাস।

পিন্টু বলেন, ‘বাবার ভাতার কার্ড পেয়েছি চার মাস আগে। কিন্তু তিন মাস পর পর যে টাকা দেয় তা মোবাইলে আসেনি। এমনকি আমার মায়ের ভাতাও আসেনি।’

তিনি দাবি করেন, ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে এত ঝামেলা ছিল না। নগদে অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকেই ভোগান্তির শুরু। গত একমাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই সমাজসেবা অফিসে এসে ঘুরে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

সদরের আঠারখাদা এলাকার হাসিনা খাতুন বিধবা। বাচ্চাদের নিয়ে কোনোরকমে চলেন। গত তিন মাস ভাতা পাননি। মোবাইলে অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকেই এমন পরিস্থিতি, জানালেন তিনি। টাকা কবে আসবে জানেন না।

একই অবস্থা প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী জোছনা খাতুনেরও। তিনি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন বয়স্ক ভাতাভোগী ভানু নামের এক বৃদ্ধাকেও। তারা কেউই ভাতা পাননি।

মাগুরা শহরের সমাজসেবা অফিসে ভুক্তভোগীদের একাংশ

মাগুরার সমাসসেবা অফিসে ভোগান্তির শিকার এমন অন্তত পঁচিশজনকে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, অফিসে গেলেই কর্মকর্তারা তাদের চলে যেতে বলেন। ভুক্তভোগীদের কথা কেউ শোনেন না।

এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসের অফিস সহকারী রনজিত কুমার জানান, অনেকেই ভাতা পেয়েছেন। অল্প কয়েকজন পাননি। মোবাইলে ভাতা প্রক্রিয়া শুরুর কারণেই কেউ কেউ পাননি।

জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আশাদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাতা সবাই নিয়মিত পাচ্ছেন বলে জানি। যদি কেউ না পেয়ে থাকেন তবে বিষয়টি আমি দেখছি।’

ভাতার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘না পাবার তো কোনো কারণ দেখি না। কারণ এখন অনেক যাচাই বাছাই করে তারপর মোবাইলে অ্যাকাউন্টে টাকা যাচ্ছে। এতে সুবিধাভোগীদের আরও সুবিধা হয়েছে।’

তাহলে ভাতা নিয়ে ভোগান্তি কেন? এ প্রশ্নে ওই কর্মকতা জানান, ভাতাভোগী অনেক। যতটুকু লোকবল আছে তা নিয়েই চেষ্টা চলছে, যেন মানুষ ভোগান্তিতে না পড়েন।

এ বিভাগের আরো খবর