বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামলাজট কমাতে সেল গঠন: প্রধান বিচারপতি

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:১৭

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশের সকল অধস্তন আদালতে মামলাজট নিরসন তথা বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ৮টি বিভাগের জন্য একজন করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিকে প্রধান করে একটি করে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। প্রতি মাসে আমি তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিবেদন গ্রহণ করব।’

মামলাজট কমাতে দেশের আট বিভাগে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

রোববার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি এ কথা জানান।

সেল গঠন নিয়ে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশের সকল অধস্তন আদালতে মামলাজট নিরসন তথা বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ৮টি বিভাগের জন্য একজন করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিকে প্রধান করে একটি করে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। প্রতি মাসে আমি তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিবেদন গ্রহণ করব। পুরাতন মামলাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে নিষ্পত্তির বিষয়ে সুপারভাইজ এবং মনিটরিং করা হবে।’

বক্তব্যে বার অ্যাসোসিয়েশন (আইনজীবী সমিতি) ও বিচারকদের বেঞ্চকে ‘একটি পাখির দুইটি ডানা’ আখ্যা দেন প্রধান বিচারপতি।

বক্তব্যের শুরুতে স্রষ্টা, বঙ্গবন্ধু, মা-বাবাকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বার ও বেঞ্চ হলো একটি পাখির দুইটি ডানা, আর জুডিশিয়ারি হলো সমস্ত দেহ। পাখা দুইটি সমানভাবে শক্তিশালী করার মাধ্যমে এই দেশের সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। বারের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’

বিচারব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘মামলার অনুপাতে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি, আদালত অনুপাতে বিচারকার্যে সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বৃদ্ধি, আদালতসমূহের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, বিচার বিভাগে ডিজিটালাইজেশন, আধুনিক বিচার প্রশাসন কৌশল প্রণয়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ, বিচার কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জোগান, রাষ্ট্রের আর্থিক সক্ষমতার নিরিখে বিচারকদের প্রয়োজনীয় দাবি পূরণসহ আরও যে সকল বিষয় রয়েছে, সে সম্পর্কে আমি সজাগ ও সচেতন রয়েছি।’

বিচার বিভাগের এসব প্রয়োজন পূরণে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা আগের চেয়ে বেশি গতিতে অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নতুন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করলে অবশ্যই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারব ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটি অঙ্গ যদি দুর্বল বা সমস্যাগ্রস্ত হয়, তাহলে রাষ্ট্রটি শক্তিশালী হতে পারে না। সে কারণে আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রের অপর দুইটি বিভাগ তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

বিচারকের সংখ্যা নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রায় ১৮ কোটি মানুষের দেশে মাত্র এক হাজার ৯০০ জন বিচারকের কাঁধে যে বিপুল পরিমাণ মামলা অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে, তা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়।’

বিচারকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ন্যায়বিচার জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া জনগণের প্রতি দয়া নয়; বরং এটি জনগণের সহজাত অধিকার। আমি এই অধিকারকে কেবল সাংবিধানিক অধিকার বলে সাব্যস্ত করতে রাজি নই। ন্যায়বিচারের সৌকর্য এবং আইনের রাজকীয়তা প্রকৃতপক্ষে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন বটে।

‘সে কারণে দেশের সকল বিজ্ঞ বিচারককে নিরপেক্ষতার সাথে, নির্মোহ হয়ে, নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সহজাত অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার।’

এ প্রসঙ্গে তিনি পবিত্র কোরআনের সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতের তরজমা করে শোনান।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগে কোনো দুষ্ট ক্ষতকে আমরা ন্যূনতম প্রশ্রয় দেবো না। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সকল শাখাসমূহের অস্বচ্ছতা, অনিয়ম, অলসতা এবং অযোগ্যতাকে নির্মূল করতে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণে আমি সকলকে পাশে পাব, এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’

নিজেকে প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষ উল্লেখ করে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এই দেশের মানুষের দুঃখ-কষ্ট, আবেগ-অনুভূতি ও আনন্দ-বিরহ মনের গভীর থেকে আমি উপলব্ধি করতে পারি। সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার কোনো অশুভ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আমি উদারচিত্তে বিচার বিভাগকে নিয়ে আইনের কাঠামোর মধ্যে যেকোনো গঠনমূলক আলোচনা ও সমালোচনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর