পিরের ‘আদেশ’ মেনে ভোট দিতে না যাওয়া চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের সেই নারীদের নিয়ে আলোচনা সভা করেছে প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার দুপুরে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত কলেজ মিলনায়তনে এই সভা হয়।
সভায় কোরআন ও হাদিসের আলোকে নারীদের ভোট দেয়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইউনুস হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচ দশক আগে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে কলেরা মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর আয়োজন করা দোয়া মাহফিলে পির মওদুদ হাসান জৈনপুরী আদেশ দেন, ইউনিয়নের সব নারীকে কঠোর পর্দা করতে হবে। আর তাহলেই দূর হবে কলেরা।
এরপর কেটে গেছে প্রায় ৫০ বছর। পর্দার কঠোর নিয়ম ধীরে ধীরে শিথিল হয়েছে, তবে সেই থেকে আর ভোটকেন্দ্রমুখী হননি ইউনিয়নের নারীরা। ভোট না দিলেও বাড়ির বাইরের বাকি সব কাজই করছেন নারীরা। এমনকি নির্বাচনেও প্রার্থী হচ্ছেন।
এ নিয়ে পিরের ‘আদেশ’, তাই কখনও ভোট দেননি নারীরা নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি কোনো আলেম নারীদের ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেবেন না। পর্দা রক্ষা করে নারীদের ভোট দেয়া ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।
‘নারীরা ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকলে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। অযোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত হলে ধর্মীয়ভাবে নারীরাও এর দায় এড়াতে পারেন না। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে তাদের ভোট দিতে হবে।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিউলি হরির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ হোসেন, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান।