বাংলাদেশের পাবনা পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ও ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছেন যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা। প্রতিবারের মতো এ বছরও গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন থেকে পদ্মা ও গঙ্গা নদীতে পর্যবেক্ষণ চলছে।
পদ্মা নদীর আড়াইহাজার ফুট উজানে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পয়েন্টে শনিবার সকালে পর্যবেক্ষণ করেন ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপঙ্কর দাস ও কমিশনের সহকারী পরিচালক প্রকাশ এস।
এসব নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পানি পরিমাপক সংস্থা পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘গত বছর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়েছিল ৮৮ হাজার কিউসেক। ৩১ ডিসেম্বর এই পয়েন্টে পানির প্রবাহ ১ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক রেকর্ড করা হয়েছে।
‘এ বছর শুরু থেকেই প্রবাহ ভালো হওয়ায় বছরজুড়ে পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। যদিও প্রতিনিধিদলের পানি পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে।’
যৌথ নদী কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী টি এম রাশিদুল কবিরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের চার সদস্যের প্রতিনিধিদলও ফারাক্কার ভাটিতে গঙ্গার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে বলে জানান রইচ উদ্দিন।
চুক্তি অনুযায়ী, যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা ১০ দিন পর পর পানি প্রবাহের রেকর্ড প্রকাশ করবেন। ১৯৯৬ সালে সই হওয়া গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুসারে, শুষ্ক মৌসুমে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দুই দেশের প্রতিনিধিদল গঙ্গা ও পদ্মার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে থাকে।
পানি বণ্টন চুক্তির আওতায় প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১০ দিনওয়ারি ভিত্তিতে ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর পানির প্রবাহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বণ্টন করা হয়।
প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কায় ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানির প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়েই ৫০ শতাংশ করে পানি পাবে।
দ্বিতীয় ১০ দিনে ফারাক্কা পয়েন্টে ৭০ হাজার কিউসেক থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে, বাকি পানি পাবে ভারত।
তৃতীয় ১০ দিন ফারাক্কা পয়েন্টে ৭৫ হাজার কিউসেক বা তার বেশি পানি প্রবাহ থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, বাকিটা বাংলাদেশের।
চুক্তি অনুযায়ী, ১১ মার্চ থেকে ১০ মে সময়কালে দুই দেশই ১০ দিন পর পর নিশ্চিতভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে।
বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত ২০২১ সালের পানি প্রবাহের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম ১০ দিনে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ৬৯ হাজার ১১৪ কিউসেক। এ সময় ফারাক্কা পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ৯৩ হাজার ৯৫৭ কিউসেক।