নতুন বছরে দেশে সরকার পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সেই সরকারের নাম দিয়েছেন জনগণের সরকার।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জনের কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি নেতা বলেছেন, দেশে যে সংকট, সেটির প্রধান বিষয় নির্বাচন কমিশন নয়, নির্বাচনকালীন সরকার।
ছাত্রদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী রাজধানীর জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা স্লোগান দেন তারা। এর কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতা-কর্মীদের নিয়ে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং মোনাজাত করেন তিনি।
নতুন বছরের প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, এই নববর্ষে জনগণ মুক্ত হবে, গণতন্ত্র মুক্ত হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন এবং দেশে অবশ্যই আমরা একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।’
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নববর্ষে জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
প্রধান সংকট নির্বাচনকালীন সরকার
রাষ্ট্রপতির সংলাপের প্রসঙ্গ তুলতেই ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই সংলাপকে অর্থহীন মনে করছি। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সেটি কোনো নির্বাচন কমিশন গঠনের সংকট নয় বা আইন তৈরি করারও সংকট নয়। প্রধান যে সংকট সেটি হচ্ছে নির্বাচনকালীন কোন রকম সরকার থাকবে? সেটি হচ্ছে প্রধান সংকট।
‘যদি আওয়ামী লীগ সরকার থাকে তাহলে সে নির্বাচনের কোনো মূল্যই হতে পারে না। অর্থই হতে পারে না। অবশ্যই আমরা যেটা বলেছি নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকার থাকতে হবে। যারা নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং তাদের পরিচালনায় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনের প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অতন্ত্র ও আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। সেই সময় ছাত্রদলের নেতারা আজকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে এসেছেন। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও মোনাজাত শেষে নেতা-কর্মীরা শপথ নিয়েছেন। দেশনেত্রীকে মুক্তি এবং বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসার আন্দোলন আরও বেগবান করবে এবং ২০২২ সালে তারা সফল হবে।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এত অল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীর প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘আজ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ দিনটি উপলক্ষে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার অনুমতি চাওয়া হলে প্রশাসন থেকে মাত্র ৪০ জন নেতা-কর্মী আসার অনুমতি দেয়।
‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার মাজার, এখানে আমাদের শ্রদ্ধার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা। এ জায়গার সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আমরা চাইনি এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হোক। এ জন্য প্রশাসনের বেঁধে দেয়া নিয়মের মধ্যেই থেকেছি।’