নতুন বছরে প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা দেখছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছর নিয়ে যাবে অমিত সম্ভাবনার পথে।
অতীতকে পেছনে ফেলে বহমান সময় তার চিরায়ত নিয়মে এনেছে নতুন বছর। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দকে বরণ করে নিতে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা বর্ণাঢ্য আয়োজন। খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। যদিও করোনাভাইরাস মহামারি সেই আয়োজনকে কিছুটা ফিকে করে দিয়েছে।
দেশের সব মানুষ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের নতুন বছরে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতির ভাবনায় করোনা
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ; খ্রিষ্টীয় নববর্ষে এ প্রত্যাশা করি। খ্রিষ্টীয় নববর্ষ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ ও কল্যাণ।’
নতুন বছরে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বানও জানান তিনি।
বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে বিশ্বব্যাপী করোনার নতুন অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে সতর্কতা প্রতিপালনের বিকল্প নেই।
‘একজনের আনন্দ যেন অন্যদের বিষাদের কারণ না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নববর্ষ উদযাপনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
‘সমৃদ্ধির পানে বাংলাদেশ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরেন। বলেন, ‘নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
নতুন বছরে নব উদ্যমে কাজ করার কথাও বলেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘প্রকৃতির নিয়মেই যেমন নতুনের আগমনী বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, তেমনি অতীত-ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পুরোনো স্মৃতিসম্ভারে হারিয়ে যাওয়ার চিরায়ত স্বভাব কখনও আনন্দ দেয়, কখনও কৃতকর্মের শিক্ষা নব উদ্যোমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়।’
২০২২ সালে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প খুলে দেয়ার কথা বলেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘পদ্মা সেতু নতুন বছরের মধ্যবর্তী সময়ে খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছি। রাজধানীতে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগব্যবস্থাকে আধুনিক করেছি।’
নতুন বছরে দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় উগ্রবাদসহ যেকোনো সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশ গড়ার ডাকও দেন তিনি।
বলেন, ‘আসুন আমরা নতুন বছরে প্রতিজ্ঞা করি, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সর্বদা সমুন্নত রাখব, দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব এবং ধর্মীয় উগ্রবাদসহ যেকোনো সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’