নারী শ্রমিকদের আবাসন সমস্যা মেটাতে মোংলা ইপিজেডে চালু হয়েছে ডরমিটরি। ‘মধুমালতী’ নামের চারতলা ডরমিটরিতে ১ হাজার ৮ জন শ্রমিক বাস করতে পারবেন।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের আটটি ইপিজেডের মধ্যে এই প্রথম নারী শ্রমিকদের জন্য ডরমিটরি নির্মাণ করেছে। অন্যান্য এলাকাতেও পর্যায়ক্রমে ডরমিটরি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বেপজা।
বৃহস্পতিবার মোংলার ডরমিটরি উদ্বোধন করেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিকদের একা অথবা পরিবার নিয়ে বসবাসের জন্য সব ইপিজেডে ডরমিটরি তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই অংশ হিসেবে মোংলা ইপিজেডে প্রথম ডরমিটরি নির্মাণ করা হলো। অন্যান্য ইপিজেডে পর্যায়ক্রমে নারী শ্রমিকদের জন্য ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে।
‘মোংলা ইপিজেড লোকালয় থেকে বেশ দূরে, সেখানে শ্রমিকদের বসবাসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে নারী শ্রমিকদের প্রতিদিন যাতায়াত ছিল কষ্টসাধ্য। ডরমিটরি চালুর ফলে শ্রমিকরা কারখানার খুব কাছাকাছি থেকে কাজ করতে পারবেন। এতে তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত হবে।’
অনুষ্ঠানে মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব আহমেদ সিদ্দিক, বেপজার নির্বাহী পরিচালক (নিরাপত্তা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামানসহ ইপিজেডের কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোংলার ডরমিটরি উদ্বোধন করেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বেপজা সূত্রে জানা যায়, তিন একরের বেশি জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এ ডরমিটরি। ব্যয় হয়েছে ২৬ দশমিক ২৭ কোটি টাকা। ডরমিটরিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ১২৬টি কক্ষ রয়েছে। ৫০০ জনের একসঙ্গে খাবার উপযোগী একটি ডাইনিং রুম আছে। চিত্তবিনোদনের জন্য ইনডোর গেমিং রুম, টিভি রুম, নামাজ ঘর, কমিউনিটি স্পেস, ডে-কেয়ার রুম আছে সেখানে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পরিশোধিত সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে ডরমিটরিতে।
আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে মোংলা ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩০৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ ইপিজেডে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৩৪টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনরত রয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এখানে।
মোংলা ইপিজেড থেকে এ পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্যসমাগ্রী। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্যসামগ্রী তৈরি করতে বর্তমানে সেখানে ৮ হাজার ১৫০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত।