বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্যটক সমাগমে ‘ভাটার টান’ কক্সবাজারে

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৯:১২

কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘অতিরিক্ত দাম রাখার ভুল মেসেজ আর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা পর্যটনসংশ্লিষ্টদের বড় ক্ষতি করে ফেলল। করোনার কারণে টানা লোকসানে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। তার মধ্যে এমন ঘটনায় এখন এত বড় একটা দিনে ৫০ শতাংশ বুকিংও পাচ্ছি না। যা কক্সবাজারের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

বর্ষবরণ ও বিদায় ঘিরে প্রতি বছর কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটে। তবে এবার সেই স্রোতে ভাটার টান দেখছেন হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, বছরের এ সময়ে বেশির ভাগ কক্ষ বুকিং হয়নি। অথচ অতীতে আগেভাগেই বুকিং হয়ে যেত শতকরা ৯৫ ভাগ কক্ষ।

এ অবস্থার জন্য দুটি বিষয়কে সামনে এনেছেন তারা। এর একটি খাবারের দাম নিয়ে অপপ্রচার এবং এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ।

জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছেন, ‘বিচ্ছিন্ন’ কিছু ঘটনায় তারা কিছুটা বিব্রত। তবে পর্যটকবান্ধব কক্সবাজার গড়তে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

শহরের কলাতলী, সুগন্ধা বা লাবনীতে রয়েছে ৫১৬টি হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট। এদেরই একটি হোটেল অপেরা ওশান।

প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম রিপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের আগে থার্টি ফাস্ট নাইট ঘিরে কম করে হলেও ৯৫ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হয়ে যেত। এবারও আমরা তেমন আশা করেছিলাম।

‘তবে পর্যটক সমাগমের প্রবণতায় ভাটা দেখছি। যারা ফোন করছেন, প্রথমেই নিরাপত্তাব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। কিন্তু কী জবাব দেব। এবারে সে রকম ব্যবসা নাও হতে পারে।’

কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অতিরিক্ত দাম রাখার ভুল মেসেজ আর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা পর্যটনসংশ্লিষ্টদের বড় ক্ষতি করে ফেলল।

‘করোনার কারণে টানা লোকসানে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। তার মধ্যে এমন ঘটনায় এখন এত বড় একটা দিনে ৫০ শতাংশ বুকিংও পাচ্ছি না। যা কক্সবাজারের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

নিরাপত্তা নিয়ে নানা প্রশ্নের মধ্যে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার ঘুরতে দেখা গেছে চার রাশিয়ানকে। ছবি: নিউজবাংলা

ভিজতা-বে হোটেলের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়াল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মোটামুটি হয়েছে। তবে অনেকের একেবারে বুকিং নেই বললে চলে।’ কক্সবাজার পৌরসভার তথ্য, জেলায় বসবাস প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের। এর বাইরে শতাধিক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় দাতা সংস্থায় কর্মরত প্রায় পাঁচ হাজার বিদেশি এখানে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। স্থায়ী-অস্থায়ী ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় শহরের বিভিন্ন স্থানে ৬৪টি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তবে এসব সিসিটিভির বেশির ভাগই অকেজো হয়ে গেছে বলে অভিযোগ আছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কক্সবাজার ভৌগোলিকভাবে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠেছে। একে পর্যটন শহরে রূপ দেয়ার মতো কিছুই হয়নি। এতগুলো সংস্থা থাকার পরও কেন ছিনতাই বা পর্যটক হয়রানি হবে। শুধু ব্যক্তিস্বার্থ নিয়েই পড়ে আছে সবাই।’

পর্যটন জোনে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচল অপরাধ বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তবে এত সব শঙ্কা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে চার রাশিয়ান নাগরিককে দেখা গেছে। নেচেগেয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করেছেন তারা।

তাদের একজন নাজিরা। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ খুবই সুন্দর। এখানকার নিরাপত্তা আমাদের ভালো লেগেছে। সার্বক্ষণিক পুলিশ ছিল।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৈকতে বা পর্যটন জোনে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আমরাও কাজ করছি। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। বেশকিছু আসামি আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উঠে আসা যায় সেদিকে নজর রেখে কাজ চলছে।’

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘থার্টিফাস্ট উপলক্ষে এখন পর্যন্ত তিনটা বৈঠক করেছি। পর্যটন সেবার মান উন্নয়নের জন্য সাত দফা পদক্ষেপ নিয়েছি।

‘দফায় দফায় বৈঠকের মূল কারণ শুধু থার্টিফাস্টে পর্যটকদের সমাগম নিরাপদ করা। কোথাও যেন কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর