ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে করোনার টিকা নেয়ার পর এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত্যু হয় তার।
চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বরে আক্রান্ত মেয়েটি হার্ট ফেইল করে মারা যেতে পারে।
পরিবার বলছে, টিকাদানের আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলে প্রাণহানি এড়ানো যেত। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন।
১৩ বছরের মৃত আল্লাদী খাতুন কোটচাঁদপুর উপজেলার দুধসরা গ্রামে টিটো হোসেনের মেয়ে। সে কোটচাঁদপুর বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
তার পরিবার জানায়, গত ২৭ নভেম্বর কোটচাঁদপুর পৌর পাঠাগারে বালিকা বিদ্যালয়ে আল্লাদীকে ফাইজারের টিকা দেয়া হয়। মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে তাকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে নেয়া হয় যশোর জেনারেল হাসপাতালে।
মেয়েটির ফুপু জাহানারা খাতুন বলেন, ‘টিকা নেয়ার কয়েকদিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হয় আল্লাদী। ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে সে। কিন্তু শরীর খুব দুর্বল ছিল। টিকা নেয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
বাবা টিটো হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্কুল থেকে কার্ড দিয়ে টিকা দিতে বলা হয়েছে। টিকা যেখানে দেয়া হয়েছে সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা ওরা করেনি। টিকা দেয়ার পর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
‘আমার মেয়েটা মারা গেছে স্কুলের শিক্ষক আর যারা টিকা দিয়েছে তাদের গাফিলতির কারণে। আমি বিচার চাই। কেন ওরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে টিকা দিল। যদি পরীক্ষা করে টিকা না দিত তাহলে এই ঘটনা ঘটত না।’
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখন জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি ছিল। সে খেজুরের রস খেয়েছিল কি না তা পরিবারের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করছি।
‘কেন সে জ্বর থাকা অবস্থায় টিকা নিল। আমরা তো ওই সময় সবাইকে বলে দিয়েছিলাম যে অসুস্থ হলে টিকা নেয়া যাবে না।’
এ ব্যাপারে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আক্তারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটার আগে থেকেই জ্বর ছিল। টিকা নেয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গতকাল সন্ধ্যার পর তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।
‘সেখানেও তার অবস্থা খারাপ হলে ভেন্টিলেটরে দেয়া হয়। কিন্তু মেয়েটাকে বাঁচানো যায়নি।’
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মেয়েটি জ্বরের কারণে হার্ট ফেইল করতে পারে। তবে সঠিক কারণ পরে জানা যাবে।’
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমরা টিকা নেয়ার পরে মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। যশোরে আমাদের একটি টিম গেছে। তদন্ত করে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে পারব।’