বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিশোরীকে পোড়াল কে?

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৭

মারুফার বাবা মুজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে কারও ঝগড়া আছে বলে মনে হয় না। সে ঘর থেকে বের হওয়ার পরই হত্যা করা হয়েছে। তাই এখন মনে হচ্ছে মেয়েটির শত্রু ছিল। নাহলে এমন হওয়ার তো কথা না।’

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ঝোপ থেকে কিশোরীর পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার কোনো ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, মারুফা আক্তার নামে ১৪ বছরের মেয়েটির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দেয়া তথ্যে দেখা দিয়েছে গরমিল।

উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের কদম রসুলপুর এলাকার ঝোপ থেকে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উদ্ধার করা হয় মারুফার পোড়া দেহ।

দিনমজুর মুজিবুর রহমান ও বেদেনা আক্তারের মেয়ে মারুফা। তার দুই ভাই ও পাঁচ বোন আছে। মারুফা পড়ত স্থানীয় একটি মাদ্রাসায়।

পরিবার বলছে, করোনার কারণে দুই বছর আগে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যায় মারুফার। তারপর থেকে সব সময় ঘরেই থাকত মেয়েটি।

মঙ্গলবার রাতে ছোট বোন রহিমা আক্তারের সঙ্গে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল মারুফা। রহিমাই ভোরের দিকে প্রথম টের পায়, পাশে নেই তার বোন। সেই সবাইকে ঘুম থেকে তুলে বোনকে খুঁজতে বলে।

রহিমা রসুলপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। নিউজবাংলাকে সে জানায়, রাতে হয়তো টয়লেটে যাওয়ার জন্য মারুফা ঘর থেকে বের হয়। সে ভোরের দিকে টের পায় মারুফা নেই। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন দেখে মারুফা ফিরছে না, তখন বাড়ির অন্যদের ডেকে তোলে।

খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ি থেকে ৪০০ গজ দূরের ঝোপে গিয়ে মারুফার দগ্ধ মরদেহ পায় তারা।

মারুফার বাবা মুজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে কারও ঝগড়া আছে বলে মনে হয় না। সে ঘর থেকে বের হওয়ার পরই হত্যা করা হয়েছে। তাই এখন মনে হচ্ছে মেয়েটির শত্রু ছিল। নাহলে এমন হওয়ার তো কথা না।’

তিনি জানান, ভোরে রহিমা এসে মারুফাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানালে সবাই উঠে দেখে, ঘরের দরজা খোলা। তারা ভাবেন, মেয়ে হয়তো বাইরে টয়লেটে গেছে। সেখানে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন।

একপর্যায়ে তারা ঝোপে গিয়ে মেয়ের দগ্ধ মরদেহ দেখেন। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। পরে খবর দেয়া হয় পুলিশে।

মারুফার মা বেদেনা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে পর্দা করে চলত। সে একটু বোকা ধরনের ছিল, একটু মানসিক সমস্যা ছিল। সব সময় হাসত। এ জন্য তাকে কবিরাজি চিকিৎসাও দেয়া হয়েছিল, কিন্তু আমার মেয়েকে হত্যা করা হলো কেন এখনও বুঝছি না।’

মারুফার চাচি আজিরা খাতুন থাকেন তাদের বাড়ির পাশেই।

তিনি বলেন, ‘মারুফার কারও সঙ্গে কোনো সমস্যা ছিল না। পরিবারের সবার সঙ্গেই তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।’

গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘নিহতের পরিবারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ হত্যার সঙ্গে তথ্যের যথেষ্ট গরমিল রয়েছে।’

বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি বলেও জানান ওসি।

তিনি জানান, পরিবারে দাবি কারও সঙ্গে মারুফার কোনো শত্রুতা ছিল না। কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও ছিল না। তাদের টয়লেট বাড়ির পাশেই। এত রাতে মেয়েটি নিজ থেকে উঠে বাইরে কেন যাবে, টয়লেটে গেলেও ফিরে ঘরে না এসে ঝোপে কেন যাবে- এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে।

‘আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে অনুসন্ধান চালাচ্ছি। আশা করছি, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’

জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধারের সময় তিনি সেখানে ছিলেন।

তিনি জানান, মরদেহের পাশে গ্যাস লাইটার ও পুরুষের এক জোড়া জুতা পাওয়া গেছে। সেগুলোর সূত্র ধরেই তদন্ত করা হচ্ছে। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। কোনো ক্ষোভ থেকে তাকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আরও তথ্য জানা যাবে।

এ বিভাগের আরো খবর