বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধূমপানের স্থান তৈরিতে তামাক কোম্পানির প্রণোদনা

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০২:১৪

গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৭৩ ভাগ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থানে, শতকরা ২৭ ভাগ রেস্তোরাঁর ঢোকা বা বের হবার পথে এবং রেস্তোরাঁর খাবার পরিবেশন টেবিলের কাছে তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে। তামাক কোম্পানিগুলো রেস্তোরাঁর মালিকদের অবস্থান বুঝে এককালীন চার থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ সুবিধা দেয়। এই সুবিধা নেয়ার সময় ৬০ ভাগ রেস্তোরাঁ মালিক লিখিত চুক্তি সই এবং ৪০ ভাগ মৌখিক চুক্তি করেছেন।

তামাক কোম্পানিগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে বিভিন্ন কূট-কৌশলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শনের মাধ্যমে কিশোর এবং যুবকদের তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণে উৎসাহিত করছে। বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান স্থাপনের জন্য অনৈতিকভাবে প্রণোদনাও দিচ্ছে কোম্পানিগুলো।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এবং ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

সংস্থাটি দুটি তামাক কোম্পানির আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে দুইটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হক এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল।

টিভি টুডে’র এডিটর ইন চিফ মনজুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যরা।

গবেষণায় দেখা যায়, বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় ‘আলোকিত রঙিন সজ্জিত বাক্স’ (যার ভেতর সিগারেটের খালি প্যাকেট) বিজ্ঞাপনের উপকরণ হিসাবে প্রদর্শিত হচ্ছে।

শতকরা ৭৩ ভাগ রেস্তোরাঁয় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থানে, শতকরা ২৭ ভাগ রেস্তোরাঁর ঢোকার/বের হবার পথে এবং রেস্তোরাঁর খাবার পরিবেশন টেবিলের কাছে তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে।

তামাক কোম্পানিগুলো রেস্তোরাঁর মালিকদের অবস্থান বুঝে এককালীন চার থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ সুবিধা দেয়। এই সুবিধা নেয়ার সময় ৬০ ভাগ রেস্তোরাঁ মালিক লিখিত চুক্তি এবং ৪০ ভাগ মৌখিক চুক্তি করেছেন।

এছাড়া রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে টি-শার্ট, লাইটার, অ্যাশ ট্রে, রান্নার জিনিস, কফি মগ, তামাকজাত দ্রব্য, প্লেট/গ্লাস, কোভিড প্রতিরক্ষামূলক সামগ্রী, বিনা মূল্যে নতুন ব্র্যান্ডের সিগারেটের নমুনা ইত্যাদি উপহারও দেয়।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ. ফ. ম. রুহুল হক বলেন, ‘ধূমপানের বিরুদ্ধে মানুষ যথেষ্ট সচেতন। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যদি ব্যবসায়িক স্বার্থে আইন লঙ্ঘন করে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর হতে হবে। বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা এবং বিক্রির স্থানে পণ্য প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করাতে আরও কঠোর বিধান আনতে হবে।’

অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘গণপরিবহনে ধুমপানের ব্যবস্থা আগে থেকে কমেছে। এর থেকে বুঝা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যমান আইনের দুর্বলতা ব্যবহার করে রেস্তোরাঁয় ধুমপানের নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান বাতিল করতে হবে। যাতে অধুমপায়ী ‍বিশেষ করে, নারী এবং শিশুরা পরোক্ষ ধুমপান থেকে রক্ষা পায়।’

গবেষণার তথ্যে বলা হয়, কোম্পানিগুলো পণ্য বিক্রি বাড়াতে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য আকর্ষণীয় উপহার সামগ্রী, প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী সরঞ্জাম এবং সোনার কয়েন, এলইডি টিভি, এয়ার-কন্ডিশনার, ফ্রিজ এবং দামী গিফট ভাউচারের মতো বিলাস সামগ্রী উপহার দেয়।

বিএটি ও জেটিআই তাদের ডিলার, পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতাদের উৎসাহ দিতে দেশে-বিদেশে বিনা মূল্যে ভ্রমণের ব্যবস্থাও করে।

বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা নিশ্চিত করতে, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে আরও জোরদার করে সব বিক্রয় কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন, বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর