বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান চালু না হলে কঠোর আন্দোলন’

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০১:০২

বৈকুন্ঠপুর চা বাগান আন্দোলন কমিটি সভাপতি মনিব কর্মকার বলেন, ‘এই বাগানে স্থায়ী ৪১১ জন এবং অস্থায়ী ৩০ জন শ্রমিক রয়েছেন। এই শ্রমিকদের জীবিকা বাগানের ওপরই নির্ভরশীল। ২৭ দিন ধরে বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেতন ও রেশন পাচ্ছেন না। এতে অনাহারে, অর্ধহারে দিন কাটছে তাদের।’

ব্যবস্থাপককে মারধরের জেরে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান ২৭ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বাগানের প্রায় সাড়ে চার শ শ্রমিক। মজুরি ও রেশন বন্ধ থাকায় অনিশ্চিত জীবন কাটাচ্ছেন তারা।

সংকট নিরসনে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বৈকুন্ঠপুর চা বাগানের স্থানীয় নাট্যমন্দিরে মতবিনিময় ও প্রতিবাদ সভা করেন ‘বৈকুন্ঠপুর চা বাগান আন্দোলন কমিটি’। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাগানের কার্যক্রম চালুর দাবি তোলেন বক্তারা। আর তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।

বক্তারা বলেন, বৈকুন্ঠপুর চা বাগানের স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে আবাসন সুবিধা দেয়ার কথা। অথচ বৈকুণ্ঠপুর বাগানের মালিকপক্ষ স্থায়ী চা শ্রমিক দিলীপ কেউটকে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে। এক পর্যায়ে বাগানের একটি অংশে ব্যবস্থাপক ও পঞ্চায়েত কমিটির কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ঘর নির্মাণ করেন দিলীপ। কিন্তু ১৫ দিন না যেতেই, তাকে সেখান থেকে ঘর সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

বৈকুন্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকন চৌহান বলেন, ‘অস্থায়ী চা শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, মজুরি বৃদ্ধি এবং আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

‘২০১৯ সালে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর কর্তৃক ২৫ দফা ইশতেহারের ২৩ নম্বর অনুচ্ছেদে স্থানীয় আবাসন সংকট নিরসনের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। কিন্তু তিন বছরেও এক দফা মেনে নেয়া হয়নি।’

বৈকুন্ঠপুর চা বাগান আন্দোলন কমিটি সভাপতি মনিব কর্মকার বলেন, ‘এই বাগানে স্থায়ী ৪১১ জন এবং অস্থায়ী ৩০ জন শ্রমিক রয়েছেন। এই শ্রমিকদের জীবিকা বাগানের ওপরই নির্ভরশীল। ২৭ দিন ধরে বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেতন ও রেশন পাচ্ছেন না। এতে অনাহারে, অর্ধহারে দিন কাটছে তাদের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, দিলীপ কেউটের ঘর উচ্ছেদ বহাল থাকবে। প্রতিবাদকারী ২০ শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হবে। বাকি শ্রমিকদের প্রত্যেককে ৩ শতক করে জমি দেয়া হবে। এসব শর্ত মেনে নিলে বাগান চালু হবে।

‘কিন্তু আমরা সাফ জানিয়ে দিয়েছি, এসব শর্ত মানি না। আগামী ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবারের মধ্যে যাবতীয় সংকট নিরসন না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।’

বৈকুন্ঠপুর চা বাগান আন্দোলন কমিটির প্রতিবাদ সভা। ছবি: নিউজবাংলা

বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘বাগানের শ্রমিকদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক দিলীপ নিয়ম ভেঙে বাগানের ভেতর পাকা ঘর নির্মাণ করেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এলে তাকে বাধা দিই। কিন্তু তিনি শোনেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাগানের নিয়ম ভঙ্গ করা এবং নির্দেশনা অমান্য করায় আমরা তার শ্রমিক কার্ড বাতিল করি। যে কারণে গত ৭ ডিসেম্বর তিনি (দিলিপ) বাগানের পঞ্চায়েত কমিটিকে নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। শ্রমিকরা আমাকে ও আমার ডেপুটিকে পেটায়, বাংলো ভাঙচুর করেন। পরদিন ১২ জনকে আসামি করে মাধপুর থানায় মামলা করি।’

সামছুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি বাগান মালিককে জানালে তিনি বাগান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, লস্করপুর ভ্যালীর সভাপতি রবীন্দ্র গৌড়, সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ বাড়াইক, বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের আহ্বায়ক খাইরুন আক্তার। এ ছাড়া নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মীরা কৈরী এবং রেমা-নোয়াপাড়া-চাঁদপুর-বেগমখানসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর