জাতীয় যুব কাবাডি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী তরুণ খেলোয়াড়দের উদ্দেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, যুব বিশ্বকাপে সেরা হতে চায় বাংলাদেশ।
বুধবার বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয়েছে ‘আইজিপি কাপ জাতীয় যুব কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২১। ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন পুলিশ প্রধান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তৃতীয় হতে চাই না, রানার্সআপ হতে চাই না। আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’
যুব কাবাডি বিশ্বকাপের গত আসরে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এবারের চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন থেকে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। পর্যায়ক্রমে এ দলকে আসন্ন যুব কাবাডি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
‘২০১৮ সালের আইজিপি কাপ থেকে বাছাই করা খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ওই দলকে ইরানে যুব বিশ্বকাপে পাঠানো হয়েছিল। ওই আসরে ব্রোঞ্জ পাওয়া বাংলাদেশ এবার আরও ভাল করতে চায়। এ লক্ষ্যে ভারত থেকে দুজন বিশেষজ্ঞ কোচ আনা হয়েছে।’
নতুন প্রজন্মের সামনে অপেক্ষা করছে ধনী, আধুনিক বাংলাদেশ উল্লেখ করে, আইজিপি বলেন, ‘তোমাদের সামনে আগামীর বাংলাদেশ। আগামীর বাংলাদেশ মানে ধনী বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।’
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা এ ভূখণ্ড পেয়েছি। আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৬তম অর্থনৈতিক শক্তি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ফলে আমরা দারিদ্র্যকে পরাজিত করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কাদামাটির গন্ধে সোঁদা গ্রাম বাংলার মানুষের খেলা কাবাডিকে আমাদের জাতীয় খেলা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। আমরা এ খেলাকে সারা বিশ্ব ছড়িয়ে দিতে চাই।’
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিজয় অর্জন করবো। বিজয় ছিনিয়ে আনবো। আমরা কোনো পরাভব মানবো না। বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে আসবো। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বিশ্ব কাঁপানোর জন্য, মাথা উঁচিয়ে দাঁড়ানোর জন্য।’
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক-১ ও অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মো. মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সম্পাদক-২ ও টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব নেওয়াজ সোহাগ।
র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কাবাডিকে জাতীয় খেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আমরা আমাদের জাতীয় খেলা কাবাডিকে দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় করে তুলতে দেশব্যাপী জাতীয় যুব কাবাডি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।’
চূড়ান্ত পর্বে বালক ও বালিকা বিভাগের ১৬টি করে ৩২ দল অংশগ্রহণ করছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে নানা বর্ণের বেলুন হাতে খেলোয়াড়রা মার্চপাস্ট করেন। সেখানে ছিল আতশবাজির ঝলকানি ও মনোজ্ঞ ডিসপ্লে।
পরে আইজিপি বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন।
আঞ্চলিক পর্বে বালক বিভাগে ৫৮ ও বালিকা বিভাগে ৫১ জেলা দল অংশগ্রহণ করেছে।
অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে আট অঞ্চলে ভাগ করে আয়োজিত হয় প্রাথমিক পর্বের খেলা। বালক বিভাগে ৫৮ জেলার ৪১৭ উপজেলার ৪১৭১ ইউনিয়ন ও বালিকা বিভাগে ৫১ জেলার ৩৯৮ উপজেলার ৩৮৯৭ ইউনিয়ন অংশগ্রহণ করেছে। বালক বিভাগে মোট খেলোয়াড় সংখ্যা ৫০ হাজার ৫২ জন, বালিকা বিভাগে ৪৬ হাজার ৭৬৪ জন খেলোয়াড় এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।