বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রামপুরায় বাসে আগুন-ভাঙচুরের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪

  •    
  • ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ২০:০৪

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে যে মনিরের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় রামপুরায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাদের।’

রাজধানীর রামপুরায় ২৯ নভেম্বর রাতে বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্তসহ চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে ওই অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায় কুচক্রী মহল।

মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩ এর অভিযানে রাজধানীর রামপুরা ও কুমিল্লা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মনির হোসেন, হৃদয় হাসান পারভেজ, আলাউদ্দিন সিফাত ও নাঈম হাসান মীর। তাদের মধ্যে মনিরকে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুরের অন্যতম হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘গত ২৯ নভেম্বর রামপুরায় বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অরাজকতার অপচেষ্টা করা হয়। একইসঙ্গে চলমান শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া ইস্যুকে উসকে দিতে অপপ্রচার চালানো হয়।

‘ঘটনার পর এনএসআই সহিংসতার পেছনের কারণ উদ্‌ঘাটনে মাঠে নামে। তদন্ত, বিভিন্ন ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঘটনায় সম্পৃক্তদের শনাক্ত করতে সক্ষম হন গোয়েন্দারা। পরবর্তীতে র‌্যাব ও এনএসআই যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে।’

রামপুরায় ২৯ নভেম্বর রাতে বাসে ধরিয়ে দেয়া আগুন নেভাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। ফাইল ছবি

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে যে মনিরের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় রামপুরায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাদের।’

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুর চৌরাস্তায় ঘাতক অনাবিল বাসটিতে ওঠা নিয়ে মাঈনউদ্দিনের ভগ্নিপতি সাদ্দাম ও তার বন্ধুর সঙ্গে বাসটির শ্রমিকদের বিতণ্ডা হয়। এর সূত্র ধরে সাদ্দাম ও তার বন্ধু অন্য একটি বাসে গাজীপুর থেকে রামপুরার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে সাদ্দাম ও তার বন্ধু রামপুরা এলাকায় তাদের আত্মীয় ও বন্ধুদের বাসটির চালক ও সহকারীকে শায়েস্তা করার জন্য জড়ো হতে বলে।

‘গ্রেপ্তারকৃতরা পরিকল্পনা অনুযায়ী রামপুরায় বিটিভি ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। তারা সাদ্দামের কাছ থেকে বাসের নাম জেনে নেয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান নেয়। বাসটি রামপুরায় বিটিভি ভবনের সামনের এলাকা অতিক্রমকালে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

‘আক্রান্ত হয়ে অনাবিলের চালক বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালিয়ে রামপুরা ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। পাঁচশ’ মিটারের মতো দূরত্ব অতিক্রম করার পর সাদ্দাম ও তার শ্যালক বাসটি পলাশবাগে থামানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সাদ্দামের শ্যালক মাঈনউদ্দিন বাসে জোরপূর্বক উঠতে গেলে হেলপার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মাঈনউদ্দিন প্রাণ হারান।

‘সুযোগ সন্ধানীরা শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রচার চালিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে উত্তেজনা ছড়ায়। একইসঙ্গে তারা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তায় চলমান বাস ও অন্যান্য যানবাহনে অকটেন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে।’

গ্রেপ্তারকৃতদের সম্পর্কে র‍্যাবের এই মুখপাত্র বলেন, ‘মনিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ নাশকতার সাতটি মামলা রয়েছে। তিনি রামপুরায় বাসে অগ্নিসংযোগের অন্যতম পরিকল্পনাকারী। তার নির্দেশনায় গ্রেপ্তার অন্যরা রামপুরায় নাশকতা পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয় ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।

‘আলাউদ্দিন তার নিজ গ্যারেজসহ কয়েকটি স্থানে বোতলভর্তি অকটেন মজুদ রাখে ও সরবরাহ করে। হৃদয় সশরীরে বাসে অগ্নিসংযোগ করে। আর নাঈম বিভিন্ন গ্রুপের কর্মকাণ্ড সমন্বয় করে। রাষ্ট্রবিরোধী এই ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসাজশে সিন্ডিকেটটি রামপুরায় জান-মালের ক্ষতিসাধন, নাশকতা, বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি করে।’

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার অন্যতম হোতা মনির হোসেন একটি রাজনৈতিক দলের ওয়ার্ড সভাপতি। মূলত তারই নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল না। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ফায়দা নেয়া।

এ বিভাগের আরো খবর