বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথে থাইল্যান্ডকে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘সিলেটের তামাবিল থেকে ভারত-মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডে যাবে সড়ক যোগাযোগ। এতে ভারত সম্মত হয়েছে। অন্য দেশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’
উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটি হাব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে সিলেট সিটি করপোরেশনের আয়োজনে তাকে দেয়া নাগরিক সংবর্ধনায় বিকেলে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের প্রতি খুব সদয়। উন্নয়নে বরাদ্দ দিতে তিনি দ্বিধা করেন না। না চাইতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক কিছু পাচ্ছে সিলেটবাসী। নগরীর উন্নয়নে ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার।
‘যোগাযোগব্যবস্থা-রাস্তাঘাট উন্নত হচ্ছে, অত্যাধুনিক হচ্ছে বিমানবন্দর। বৃহত্তর সিলেটের প্রতিটি কলেজে বিশেষ অনুদান দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মডেল জেলা গড়ে তোলা হচ্ছে।’
বরাদ্দ অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টাকা শুধু পেলেই হয় না, টাকা কাজে লাগাতে হয়। টাকা আগেও দিয়েছিলেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। কিন্তু ফেরত গেছে। বর্তমান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা টাকা কাজে লাগাচ্ছেন। যার ফলে সিলেটের উন্নয়ন হচ্ছে।’
‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা ও সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ঢাকা-সিলেট ছয় লেন মহাসড়ক এবং নগরীর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বিশেষ অবদানের’ জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনকে এ সংবর্ধনা দেয় সিটি করপোরেশন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে সংবর্ধনা দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। ছবি: নিউজবাংলা
তবে সিটি মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর বিভিন্ন সময় আওয়ামীবিরোধী বক্তব্য রাখার অভিযোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ‘বর্জন’ করেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। মঙ্গলবার রাতে জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এ প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাকে কেউ কেউ বলেছেন, আজকের আয়োজন আরিফ করেছেন। আমি বলেছি, আরিফ সাহেব করে নাই, করেছে সিটি করপোরেশন। বরং আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত এই কারণে যে প্রধানমন্ত্রী এত ভালো কাজ করছেন, অন্য দলের লোক সেটি স্বীকার করছেন। সেটা গ্রহণ করছেন।
‘আপনাদের তো ভালো লাগার কথা। আমি তো হলাম উসিলা মাত্র। তারা আমাকে নয়, সম্মান দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। যিনি আমাদের প্রতি সদয় হয়ে এতকিছু করছেন। সুতরাং সিলেটের উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবর্ধনার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই সিলেট নগরী আপনার-আমার সবার। কে কোন মতের, দলের সেটা দেখার বিষয় নয়। আমরা সবাই সিলেটের- এটাই মূল বিষয়।
‘এখানের ছেলে আমি, আমাদের সবার হৃদয়ে সিলেট। আমার কাছে কেউ কেউ বলেন যে মেয়র অন্য দলের। সুতরাং আপনি ওনার অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। আমি বলি- সিলেট তো আমারও। মেয়র সাহেবরও। সুতরাং বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য সব করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ আসবে, তবে সবাই আন্তরিক হয়ে কাজ করলে তা মোকাবিলা করা সম্ভব।’
জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বর্জন করলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এই অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তৃতা দেন।
এতে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।