বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লোকালয়ে আতঙ্ক ছড়ানো বাঘটি অবশেষে ধরা

  •    
  • ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৭:৪৭

বনকর্মী আমির চাঁদ বলেন, ‘আমরা জঙ্গলের নেটের বাইরে তিনটি মাচায় বন্দুক নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। প্রথম গুলি গোলপাতায় লেগে নড়ে যায়। এরপর বাঘটি লাফ দিয়ে নেটের ফেন্সিংয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেই গুলি ঠিকঠাক জায়গায় লাগে।’

সুন্দরবনের কুলতলীতে টানা ছয় দিন ধরে আতঙ্ক সৃষ্টি করা একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার অবশেষে ধরা পড়েছে। বুধবার বাঘটি আটক করে আবার বনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

বাঘটি ধরতে সক্ষম হওয়া বনকর্মীদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যারা বাঘ ধরতে সক্ষম হয়েছেন তাদের পুরস্কার দেয়া হবে।’

কুলতলীর মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়া এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করা বাঘটি ধরা পড়ায় বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘শেষ কয়েক দিন আমাদের খুব উৎকণ্ঠায় কেটেছে। তবে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল- যেভাবে হোক বাঘটিকে আমরা ধরব। শেষ পর্যন্ত বন দপ্তর সাফল্য পেয়েছে। আমি বন দপ্তরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে গ্রামবাসীকেও ধন্যবাদ।’

মৈপীঠ বসতিসংলগ্ন জঙ্গলে ঢুকে পড়া বাঘটিকে বুধবার সকাল ৭টার দিকে খাঁচাবন্দি করতে সক্ষম হন বন দপ্তরের কর্মীরা। পরে সেটিকে সুন্দরবনের রামগঙ্গার ধুলি ভাসানীর ৪-এর গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়। খাঁচা থেকে ছাড়া পেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে গভীর জঙ্গলে ফিরে যায় বাঘটি।

গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা ছয় দিন কুলতলির আতঙ্ক হয়ে ওঠা বাঘটি খাঁচাবন্দি করা সহজ হয়নি। বাঘটিকে জঙ্গল থেকে বের করতে ওয়াটার ক্যানন, মরিচ বোমা, স্টিলের নেটের ফেন্সিং, ঘুমপাড়ানি গুলি, ছাগলের টোপের খাঁচা, ক্যামেরা, ড্রোন- এমন নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়। এতসব পদক্ষেপের পরও শতাধিক বনকর্মীকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে বাঘটি ঘুরে বেড়িয়েছে প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।

মঙ্গলবার ভোরে বাঘের হুঙ্কারে কাঁপতে থাকে গোটা তল্লাট। সবাই ধারণা করে- যাক, অবশেষে বাঘ খাঁচাবন্দি হয়েছে। কিন্তু বনকর্মীরা গিয়ে দেখেন, জাল ছিঁড়ে নদীর দিকে পালানোর চেষ্টা করছে সেটি।

বনকর্মী আমির চাঁদ বলেন, ‘২৬ বছর ধরে জঙ্গলে কাজ করছি। এ পর্যন্ত ১৭টি বাঘ ধরেছি। কিন্তু এটির মতো এত চালাক আর ধূর্ত বাঘ আগে দেখিনি। মঙ্গলবার সকালে পচা মাংস দেয়া হয়েছিল। তা সে মুখেও তোলেনি। ক্ষুধার্ত বাঘটিকে দেখে হাড় হিম হয়ে গিয়েছিল। আমরা জঙ্গলের নেটের বাইরে তিনটি মাচায় বন্দুক নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। ওষুধ আমিই তৈরি করেছিলাম। প্রথম গুলি গোলপাতায় লেগে নড়ে যায়। এরপর বাঘটি লাফ দিয়ে নেটের ফেন্সিংয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেই গুলি ঠিকঠাক জায়গায় লাগে।’

সজনেখালি রেঞ্জের এক বনকর্মী বলেন, ‘পরপর দুটি গুলি লাগার পর বাঘটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারপর আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়লে একটি ইনজেকশন দেয়া হয়। তারপর আমরা নিশ্চিন্ত হই।’

এ বিভাগের আরো খবর