বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুদিন পর ফের সূচক পতন, কমল লেনদেনও

  •    
  • ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:৫৬

দুদিন পর আবার পতন দেখল পুঁজিবাজার। সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমে এসেছে ৭০০ কোটি টাকায়। তুলনামূলক চিত্রে ২০২০ সালের শেষ সপ্তাহেও এমন খরা ছিল না সূচকে।

পতনের বৃত্ত থেকে বের হয়ে চলতি সপ্তাহে টানা দুদিন সূচক বাড়ার পর প্রত্যাশা ছিল তৃতীয় দিনেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে। সপ্তাহের আরও একটি কার্মদিবস বাকি। বৃহস্পতিবারের লেনদেনে চূড়ান্ত হবে চলতি সপ্তাহে বেশির ভাগ লেনদেন মন্দায় ছিল, নাকি উত্থানে। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২১ সালের লেনদেন।

তা আর হলো না। আবার পতন দেখল পুঁজিবাজার। সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমে এসেছে ৭০০ কোটি টাকায়। তুলনামূলক চিত্রে ২০২০ সালের শেষ সপ্তাহেও এমন খরা ছিল না সূচকে।

গত চার কর্মদিবসের প্রতিদিনই সূচক বেড়েছিল। আর লেনদেনও ছিল হাজার কোটি টাকার ঘরে। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা আর সূচক ছিল ৫ হাজার ৩৫৮ পয়ন্টে।

সপ্তাহের শুরু রোববার লেনদেনের প্রথম ৩ মিনিট কেবল সূচক বাড়তে দেখা গিয়েছিল। এরপর আর বাড়েনি। বেলা ২টা ৮ মিনিটে একপর্যায়ে সূচক পড়ে যায় ৯২ পয়েন্ট। সেখান থেকে ২০ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করে লেনদেন শেষে ৭২ পয়েন্ট হারিয়ে সূচক দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬২৯ পয়েন্ট। এর চেয়ে কম সূচক ছিল গত ৯ আগস্ট, ৬ হাজার ৬২৮ পয়েন্ট।

এরপর সোম ও মঙ্গলবার সূচক ১১২ পয়েন্ট বেড়ে আলো ছড়ায় পুঁজিবাজারে।

সোমবার আলোচনায় ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন করে মার্জিন ঋণের নির্দেশনা। যেখানে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিকে মার্জিন ঋণের বাইরে রাখা হয়। তবে ‘জেড’ ক্যাটাগরি বা অন্য ক্যাটাগরি থেকে উচ্চতর কোনো ক্যাটাগরিতে উন্নীত হলে সাত কর্মদিবস পর ঋণ সুবিধা আওতায় থাকবে, এমন নির্দেশনার পর প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারে।

এদিন সূচক বাড়ে ৩৯ পয়ন্টে। আর গত ৭ ডিসেম্বরের পর টানা দুদিন সূচক বাড়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা হয় মঙ্গলবার। এদিন সূচক বেড়েছিল ৭৩ পয়েন্ট, কিন্তু সে ধারাবাহিকতা নিয়ে আর এগোতে পারেনি বুধবার। লেনদেনের শুরুতে উত্থানের চিত্র দেখা গেলেও দিন শেষে সূচক কমেছে ১১ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।

সূচক পতনের এমন অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের ধারণা, বাংলাদেশ ব্যাংকের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিনিয়োগকারীদের একটি সংগঠন মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে মানবববন্ধ করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে ব্যানার টানান তারা।

বুধবার প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছাড়াও ডিএসইএস ও ডিএস৩০ সূচক কমেছে যথাক্রমে ৪ দশমিক ১১ পয়েন্ট ও ১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে মোট ৭৩৫ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৭২ কোটি টাকা।

এদিন সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের দরপতন। কোম্পানিটির শেয়ারদর দশমিক ৭৫ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ কোম্পানির শেয়ারদর ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ।

এ ছাড়া বুধবার গ্রামীণফোনের শেয়ারদর দশমিক ৪৬ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এই তালিকায় ছিল স্কয়ার ফার্মা, রবি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ও আইসিবি।

তবে সূচক উত্থান ত্বরান্বিত করতে চেষ্টায় ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি, রেনেটা, পাওয়ার গ্রেড, রেকিট বেনকিজার ও সোনালী পেপার।

প্রায় সব কয়টি খাতের লেনদনে এদিন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। বিবিধ খাত, সাধারণ বিমা, ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের লেনদেন কমেছে।

এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি দরপতনে ছিল বস্ত্র খাতের। এদিন লেনদেনে ৫৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। বেড়েছে ৩২ শতাংশ কোম্পানির। সাধারণ বিমা খাতের ৬৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। বেড়েছে ২৫ শতাংশ কোম্পানির।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের সবশেষ চিত্র

দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকা

বুধবার সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল ঢাক্কা ডাইং। গত ১০ কর্মদিবসে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দর বেড়েছে কোম্পানিটির। তবে উল্লিখিত সময়ে সর্বোচ্চ দর বেড়েছে বুধবার, ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২১ টাকা ৩০ পয়সা দরের শেয়ারদর বৃদ্ধিতে উঠে এসেছে ২৩ টাকা ৩০ পয়সায়। মোট ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ৩৬ লাখ ৬ হাজার ৪১৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি, যার ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। এ ছাড়া আরও একটি কোম্পানি এটলাস বাংলাদেশের শেয়ারদরও বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

৭ শতাংশের বেশি শেয়ারদর বেড়েছে একটি কোম্পানির ফাইন ফুড, যার ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা দরের শেয়ার ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা ৬০ পয়সা।

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ ছাড়া ফার্মা এইডের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

৫ শতাংশের বেশি শেয়ারদর বেড়েছে দুটি কোম্পানির, এর মধ্যে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৫ দশমিক ৯ শতাংশ ও প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।

ছয়টি কোম্পানির শেয়ারদর এদিন ৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

দরপতনের ১০ কোম্পানি

দরপতনে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে এদিন ‘জেড’ ক্যাটাগরির ছিল চারটি কোম্পানি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে জিল বাংলা সুগার ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ১২৩ টাকা ১০ পয়সা দরের শেয়ার নেমে এসেছে ১১৫ টাকায়। ৮ লাখ ৭ হাজার টাকা লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির ৬ হাজার ৭৭৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

ইমাম বাটন কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। ৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ২২ হাজার ৯১০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

‘জেড’ ক্যাটাগরির মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও সাভার রিফ্যাক্টরিজের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

এ ছাড়া আইসিবি কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

রহিম টেক্সটাইলের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকার মোট ২ হাজার ৪৮৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। ৮৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকার মোট ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এ ছাড়া একমি পেস্টিসাইডের শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ। আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।

৩ শতাংশের বেশি শেয়ারদর কমেছে তাল্লু স্পিনিং মিলসের ৩ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ ও এএফসি এগ্রো কোম্পানির ৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।

লেনদেনে শীর্ষ ১০

লেনদেনে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে প্রথমেই ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, যার ৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকার মোট ৭৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ২৭ লাখ ৩২ হাজার ৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ২১০টি শেয়ার।

বিকন ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার। ১০ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০টি শেয়ার এদিন হাতবদল হয়েছে। লেনদেন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ২৯ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮৮টি। এদিন ব্যাংকটির শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যাংকটির শেয়ারদর টানা দুদিন বাড়ার পর বুধবার কমেছে।

সোনালী পেপার কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকার। ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪১২টি শেয়ার হাতবদল হওয়া কোম্পানির শেয়ারদর এদিন বেড়েছে ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ।

এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে মোট ১৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৭টি।

পাওয়ার গ্রেডের লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকার। ফরচুন সুজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৮ লাখ টাকার। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার।

এ বিভাগের আরো খবর