সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ এ কে আব্দুল মোমেনকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে বুধবার।
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর আয়োজন করা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।
মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে নিয়ে বিভিন্ন সময় কটূক্তির অভিযোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবর্ধনা বর্জনের ঘোষণা দেন দলটির স্থানীয় নেতারা।
মঙ্গলবার রাতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বুধবার বেলা আড়াইটায় সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নামে এ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনায় এবং সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ঢাকা-সিলেট ৬ লেন মহাসড়ক এবং নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বিশেষ অবদানের জন্য, সিলেটের কৃতি সন্তান, সিলেট-১ আসনের এমপি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
এই সংবর্ধনা প্রচারের লক্ষ্যে সিলেট নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। সাজানো হয়েছে রেজিস্ট্রি মাঠ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে হারিয়ে টানা দুই মেয়াদে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন ও তার বড় ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিতের সঙ্গে আরিফের ঘনিষ্ঠাতার বিষয়টি সিলেটের রাজনীতিতে আলোচিত। আওয়ামী লীগের আরও নেতার সঙ্গেও সখ্য ছিলে আরিফের। সম্প্রতি তার একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আরিফের দুরত্ব তৈরি হয়।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মৌলভীবাজারে এক স্মরণ সভায় মেয়র আরিফ আওয়ামী লীগকে ‘গন্ডারের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
যদিও আরিফের দাবি, তার বক্তব্য খন্ডিত করে প্রচার হচ্ছে।
ওই অনুষ্ঠানে আরিফের বক্তব্যের একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরই জের ধরে আরিফের আয়োজনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট আওয়ামী লীগ নেতারা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের কথা নিশ্চিত করে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘মেয়র আরিফ বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করেছেন। এছাড়া তিনি পানির বিল বাড়ানোসহ নানা জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই আমরা তার আয়োজনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
‘কটুক্তির’ পরও আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদের সংবর্ধনা গ্রহণের ব্যাপারে শফিক বলেন, ‘এটা উনার সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কোনো আলাপ হয়নি।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট সফরকালে তার অন্য সব অনুষ্ঠানে আমরা যাবো। তবে মেয়র আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাবো না।’
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।