চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটের দুইদিন পর রাজশাহীর চারঘাটের একটি কেন্দ্রের পাশের পুকুরে পাওয়া গেছে সিল মারা দুই শতাধিক ব্যালট পেপার। সংরক্ষিত নারী সদস্যদের ফলের কাগজও সেখানে মিলেছে।
চারঘাটের শলুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বামনদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশের পুকুর থেকে এগুলো মঙ্গলবার দুপুরে উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ওয়ার্ডে সাতজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ভোট গণনার শেষ পর্যায়ে কয়েকজন প্রার্থীর লোকজন দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ভোটে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করেন।
তারা এক পর্যায়ে ককটেল ফাটিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে করে ব্যালট ছিনতাই করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। রাতেই ব্যালট পেপার উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে জমা দেয় পুলিশ। পরে ফলও ঘোষণা করা হয়।
ওই স্কুলের শিক্ষার্থী আসিফুজ্জামান বাঁধন জানায়, সে মঙ্গলবার দুপুরে মাঠে ঘাস কাটতে যাচ্ছিল। এ সময় পুকুরে ৪-৫টি ব্যালট পেপার ভাসতে দেখে। একটি কাগজের প্যাকেটে নিজ স্কুলের নাম দেখে স্থানীয়দের ডেকে আনে। পরে লোকজন পুকুর থেকে দুইশর বেশি সিল মারা ব্যালট পেপার তুলে আনে।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি গণনা শেষে সব ব্যালট পেপার জমা দিয়েছি। কোথাও ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছে কি না জানা নেই।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, ‘ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোট গণনা করে সিলগালা অবস্থায় ব্যালট পেপার নির্বাচন অফিসে জমা দিয়েছে। আমাদের গুনে নেয়ার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় কোথাও ব্যালট পেপার পাওয়া গেলে উদ্ধার করে বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দুটি ঘটনা ঘটতে পারে। কেউ ভুয়া ব্যালট ছাপিয়ে আতংক সৃষ্টি করতে পারে। আবার কেউ ভোট দিয়ে বক্সে জমা না দিয়ে পকেটে নিয়ে বাইরে ফেলে দিতে পারে। নিশ্চয় কিছু একটা চক্রান্ত আছে। নাহলে কালকেই এটি জানাজানি হয়ে যেত। কোনো পক্ষ এটা করতে পারে।’
ভোটের দিন ছিনতাই হওয়া ব্যালট পেপার এগুলো কি না তা জানতে চাইলে রবিউল বলেন, ‘ওইদিনই তো সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। সেটাও হতে পারে।’
চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, পুকুরপাড় থেকে কিছু কাগজ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।