ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চ অভিযান-১০ এ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের দায়ের করা মামলায় লঞ্চটির দুই মাস্টারকে কারাগারে পাঠিয়েছে নৌ আদালত।
মঙ্গলবার মামলার ৫ নম্বর আসামি লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার ও ৭ নম্বর আসামি দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান নৌ-আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে দুই আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম।
আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, আসামিরা জামিন পেলে বিচারে অংশগ্রহণ করবেন এবং পালানোর চেষ্টা করবেন না।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা তাদের কর্তব্য কাজে চরম অবহেলা করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও কলঙ্কজনক নৌ-দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন। আসামিরা যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বিপদে জাহাজ ছেড়ে পালিয়েছেন।
আসামিরা জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যবহার করেননি জানিয়ে বেল্লাল হোসাইন আরও বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের পর জাহাজ তীরে না ভিড়িয়ে চালু রেখে চরম অবহেলা প্রদর্শন করে এই ট্র্যাজেডি ঘটান। এই ঘটনায় ৪২টি তাজা প্রাণ পুড়ে ছাই হয়েছে।’
গত রোববার নৌ-আদালতে করা মামলায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, ড্রাইভারসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ জনে। নিখোঁজ আরও অনেকে।
পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, লঞ্চটিতে অন্তত ৪০০ যাত্রী ছিল।
তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকের দাবি, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো।