ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নে এবার বাবা-ছেলে লড়াই করছেন।
ছেলে আবু হাসান আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। আর দলের মনোনয়ন না পেয়ে ঘোড়া প্রতীকে বিদ্রোহী হয়েছেন বাবা আবদুল হাকিম খান।
নির্বাচনে বাবা-ছেলের লড়াই নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কে বিজয়ী হবেন তা নিয়ে চলছে উত্তেজনার ঝড়ও।
নৌকার প্রার্থী আবু হাসান পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বাবা আবদুল হাকিম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও যশাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।বাবা-ছেলে ছাড়াও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও চারজন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, জাকের পার্টির প্রার্থী আল মামুন, স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন ও শাজাহান মিয়া।
এদিকে বাবা-ছেলের ভোটযুদ্ধ নিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, দুজনই আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী। ভোটাররা কার দিকে যাবেন, কার সঙ্গে কাজ করবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
জানা যায়, আবদুল হাকিম ২০১২ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচত হয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এখন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বেশ জোরেশোরেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আবদুল হাকিম খান জানান, তাকে বঞ্চিত করে ছেলে আবুকে মনোনয়ন দেয়াটা অন্যায় হয়েছে। ইউনিয়নে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। মানুষ তার পক্ষে রয়েছে। তাই দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
তিনি জানান, নির্বাচনি পরিবেশ মোটেই ভালো নয়। তার কর্মীরা মাইক নিয়ে প্রচারণায় বের হলেই নৌকার সমর্থকরা ফিরিয়ে দিচ্ছে। প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে দাবি তার।
নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানও।
তিনি জানান, গভীর রাতে নৌকার সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিষয়টি তিনি নির্বাচনি কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী আবু হাসান বলেন, ‘বাবা যেসব অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বাবা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মনোনয়নের আগে তাকে বলা হয়েছিল, আপনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন। এরপর তার সঙ্গে আর কথা হয়নি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘সিদ্দিকের লোকজনই এসব করে বেড়ায়। নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠুই আছে।’
যশাই ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র সেন জানান, নির্বাচনি প্রচারণায় বাধার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেননি। এরপরও প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে প্রচার চালাতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
পাংশা উপজেলা নির্বাচনি কর্মকর্তা আবদুল আলিম বলেন, ‘ওই ইউনিয়ন থেকে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি।’
আগামী ৫ জানুয়ারি এই ইউনিয়নের পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।