বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওয়াশিংটনের সামরিক সহায়তা চুক্তিতে রাজি ঢাকা

  •    
  • ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ২০:০২

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভবিষ্যৎ অনুদান নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাব করেছে। এটি কান্ট্রি-স্প্যাসিফিক বা এককভাবে বাংলাদেশের জন্যই, এমন চুক্তি নয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সামরিক সহায়তা চুক্তির প্রস্তাবে রাজি বাংলাদেশ। এ জন্য সহায়তার যে হিসাব চেয়েছে দেশটি, বাংলাদেশ তাতে সাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্নের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা। এ জন্য মঙ্গলবার দুপুরে প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান অব্যাহত রাখার উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ওয়াশিংটন প্রস্তাবিত নতুন চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ওই চুক্তির শর্তাদি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চূড়ান্ত পর্যালোচনা বৈঠক হবে। আন্তমন্ত্রণালয় ওই বৈঠক আহ্বান করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার উপযুক্ত প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকার প্রত্যাশা অতীতের ধারাবাহিকতায় আগামী দিনেও বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অনুদান অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যৎ অনুদান নিশ্চিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাব করেছে। এটি কান্ট্রি-স্প্যাসিফিক বা এককভাবে বাংলাদেশের জন্যই, এমন চুক্তি নয়।

‘ওই চুক্তির যে শর্তাবলি রয়েছে, তা বাংলাদেশের মৌলিক অবস্থানের সঙ্গে কনফ্লিক্ট করে না। বিদেশে সামরিক অনুদান দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সংশোধনী এনেছে বাইডেন প্রশাসন। সংযোজিত ধারায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নিরাপত্তা সংস্থা বা বাহিনী যদি নির্যাতন, আইনবহির্ভূত হত্যা, গুম ও ধর্ষণজনিত কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে ওই সংস্থাকে অনুদান দিতে পারবে না মার্কিন সরকার। এ ক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে এমন কোনো সংস্থা বা বাহিনীও মার্কিন অনুদান পাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসনের বৈশ্বিক অনুদানবিষয়ক অবস্থান বাংলাদেশের জন্যও প্রযোজ্য। আগামী দিনে বাংলাদেশ কোন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান ব্যবহার করবে অর্থাৎ কোন বাহিনীকে কীভাবে বরাদ্দ দেবে, তা তাদের আগাম জানাতে হবে। ওয়াশিংটন এ-সংক্রান্ত যে চুক্তির প্রস্তাব করেছে তাতে উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোই থাকছে।

‘বাংলাদেশ ওই চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক। আইনের নতুন সংশোধনী অনুযায়ী মার্কিন অনুদান অব্যাহতভাবে পেতে হলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও চুক্তি সই করতে হবে। বাংলাদেশ এই চুক্তি করবে কি না, সে বিষয়ে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। বাংলাদেশ কোথায়, কীভাবে ওই অনুদান ব্যবহার করছে, সেটাও যুক্তরাষ্ট্র জানতে চেয়েছে। আমরা এক্সচেঞ্জ নোটের মাধ্যমে ওয়াশিংটন নির্ধারিত সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই চুক্তি সইয়ের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানাব।’

তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত চুক্তিটির বিষয়ে মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। অতীতে বাংলাদেশ সামরিক খাতে যে অনুদান পেয়েছে তা কোথায়, কীভাবে ব্যয় হয়েছে তার তথ্য ওয়াশিংটনকে জানাতে হবে না। তবে ভবিষ্যতে মার্কিন অনুদান কোন বাহিনী পাবে বা কীভাবে ব্যয় হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত পরিকল্পনা জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মূলত এটাই ওয়াশিংটন প্রস্তাবিত চুক্তির মূল শর্ত।’

অতীতে শর্তহীনভাবে বাংলাদেশকে বিরাট অঙ্কের সামরিক অনুদান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ-সংক্রান্ত কোনো চুক্তি ছিল না। বন্ধুরাষ্ট্রের ওই অনুদান দেশের বিভিন্ন বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ব্যয় হয়েছে। কিন্তু নতুন বাস্তবতায় আগামীতে বৈদেশিক সহায়তার আওতায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে এখনই চুক্তি সই করতে হচ্ছে। তবে ওই চুক্তির প্রস্তাব গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগে র‌্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির ৯ দিন আগে এসেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ওই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে সামরিক অনুদান পেতে চুক্তির শর্ত জুড়ে দেয়ার সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না। কারণ অনুদানসংক্রান্ত প্রস্তাবটি আগে এসেছে। অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত নোট ভারবাল বা কূটনৈতিকপত্র পেয়েছে ঢাকা। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে পরে। তবে কাকতালীয়ভাবে ৯ দিনের ব্যবধানে আসা দুটি ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছে। ওই সহায়তার উল্লেখযোগ্য অংশ বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ ও ২০১৫ সালে বাংলাদেশকে দুটি হ্যামিলটন কাটার নৌজাহাজ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীকে সহায়তার জন্য ৫০টি মাল্টি রোল আর্মাড পার্সোন্যাল ক্যারিয়ারও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে দেশটি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২০১২ সালে ১৮ কোটি ডলারের চারটি সি-১৩০ পরিবহন বিমান পেয়েছে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ১১০ কোটি টাকা মূল্যের ড্রোন দেয়ার কথাও জানিয়েছে। তবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে দেয়া এক ঘোষণায় মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট র‌্যাব এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে প্রদেয় অনুদান বন্ধ করে দেয়।

এ বিভাগের আরো খবর