দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের জন্য এখনও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সচিবালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা এখনও আসেনি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন প্রধান বিচারপতি। তারপরেই (নির্দেশনা) আসাটা আমার মনে হয় সঠিক হবে।’
২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। দিন কয়েক পরই অবসরে যাচ্ছেন তিনি।
এমন বাস্তবতায় পরবর্তী প্রধান বিচারপতি কে হচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের অতীত চর্চা বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাধারণত আপিল বিভাগের যিনি জ্যেষ্ঠ বিচারক, তাকেই পরবর্তী প্রধান বিচারপতি করা হয়, তবে জ্যেষ্ঠতার এ নিয়ম অনেকবার ডিঙিয়েও যাওয়া হয়েছে। সংবিধানে এ বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। রাষ্ট্রপতি যাকে চাইবেন, তাকেই তিনি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন।
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এ কারণে পুরো বিষয়টি এখন রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করছে।
বর্তমানে আপিল বিভাগে বিদ্যমান পাঁচ বিচারকের মধ্যে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে গেল বাকি থাকবেন আর চার বিচারক। নিয়ম অনুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারকদের মধ্য থেকেই মূলত প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে বাকি চারজনের মধ্য থেকে একজন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পাবেন।
এ বিষয়ে আইন বিশারদদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী যদি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়, তাহলে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হওয়ার কথা বিচারপতি ইমান আলীর। তবে জ্যেষ্ঠতা অনুসরণ করা না হলে আপিল বিভাগের বাকি বিচারক বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননী ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন রাষ্ট্রপতি।
আইনজীবীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন জ্যেষ্ঠতা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হতে পারেন বিচারপতি ইমান আলী। তবে কেউ কেউ বলছেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি করা হতে পারে।
আইনজীবীরা বলছেন, আপিল বিভাগে চার বিচারপতির তিনজনেরই অবসরের মেয়াদ ২০২৩ সালের মধ্যে। এ ক্ষেত্রে একটু বেশি সময় পাবেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তবে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানেরও সম্ভাবনা রয়েছে।