দেশের বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশের ছাত্র ও যুবসমাজ নিশ্চুপ হয়ে আছে অভিযোগ করে এ অবস্থাকে আশ্চর্যের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) রোববার ‘মানবাধিকার ইস্যু এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টার এ আলোচনার আয়োজন করে।
এতে মোশাররফ বলেন, ‘আজকের দেশের যে অবস্থা, সেই অবস্থায় সবচেয়ে সোচ্চার থাকার কথা ছিল ছাত্র-যুবকদের। সকল অন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে যারা প্রথম সামনে আসে, তারা হলো ছাত্র-যুবক সমাজ। এইটা সারা বিশ্বসহ আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাস।
‘কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আজকে যা ঘটছে তারপরও বাংলাদেশের ছাত্র-যুবকরা নিশ্চুপ হয়ে আছে। তা আশ্চর্যের বিষয়।’
বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে নষ্ট হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সম্মানের, উচ্চমানের, কিন্তু আজকের বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী নিন্দা এবং ঘৃণার পাত্র। একটি স্বৈরশাসকদের দেশ হিসেবে আজকে তারা চিহ্নিত করছে। এইটা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য এবং দুঃখজনক।’
আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণ বিরক্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ইউনিয়ন কাউন্সিল (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি, কিন্তু তারপরও সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-আওয়ামী লীগের মধ্যে কী পরিমাণ সন্ত্রাস হয়েছে, কী পরিমাণ মৃত্যু হয়েছে! আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতি মানুষের এত বিতৃষ্ণা যে, স্থানীয় নির্বাচনে অধিক পরিমাণ স্বতন্ত্র প্রার্থী পাস করেছে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে বৈষম্য থাকা নিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হবে। অর্থনীতি, সামাজিক সবকিছুতে সাম্য প্রতিষ্ঠা থাকবে। স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার থাকবে, কিন্তু আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এই আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করেছি বলে জোর গলায় দাবি করতে পারছি না।’
গণতন্ত্র মুক্তিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে গণতন্ত্র আসবে না, নির্বাচনি ব্যবস্থা আসবে না। অতএব একটাই আমাদের সামনে টার্গেট। সেটা হচ্ছে, যে যেখানে আমরা থাকি না কেন, বিশেষ করে ছাত্র-যুবক সমাজকে আজকের এই বিষয়টা বুঝে এগিয়ে আসতে হবে। এই সরকারের কাছ থেকে দেশকে মুক্ত করতে না পারলে জনগণের মুক্তি হবে না।’
এম সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, শামসুল হক দুদুসহ সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের সদস্যরা।