বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ধর্ষণের দুয়েক দিন আগে ওই নারীর সঙ্গে আশিকের দেখা’

  •    
  • ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:৩৪

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দরকার আল মঈন বলেন, ‘আশিক দাবি করেছে ঘটনার দুই দিন আগে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। সেদিন সে ও তার চক্রের সদস্যরা ওই দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ওই চাঁদা আদায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পরবর্তী সময়ে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে সে।’

কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ করা নারীর সঙ্গে ঘটনার দুয়েক দিন আগে মামলার প্রধান আসামি আশিকুল ইসলামের দেখা হয়। ওই নারীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আশিক ও তার সঙ্গীরা। এর জের ধরে ২২ ডিসেম্বর ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

মাদারীপুর থেকে আশিককে গ্রেপ্তারের পর দিন ঢাকায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে এক নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার প্রধান আসামি কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা আশিককে বৃহস্পতিবার মাদারীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

ব্রিফিংয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আশিক দাবি করেছে, ঘটনার দুই দিন আগে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। সেদিন সে ও তার চক্রের সদস্যরা ওই দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ওই চাঁদা আদায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পরবর্তী সময়ে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে সে।’

অথচ ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী ২২ ডিসেম্বর রাতে সংবাদ মাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে দাবি করেছিলেন, তারা ঘটনার দিনই সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। আর র‌্যাবকে আশিক বললেন, ঘটনার দুয়েক দিন আগে তাদের কাছে চাঁদা চেয়েছিলেন।

তাহলে ওই নারী ও তার স্ত্রী কতদিন ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছিল? নিউজবাংলার এমন প্রশ্নে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘এ সম্পর্কে র‌্যাবের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। কারণ, আমরা শুধু অপহরণের অভিযোগ এবং তাকে উদ্ধার অভিযানে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। এরপর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে দেয়ায় ভুক্তভোগী নারী এবং তার স্বামীর সঙ্গে পরবর্তীতে কোনো আলাপ করার সুযোগ পায়নি র‌্যাব।’

ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারী পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন, স্বামী-সন্তান নিয়ে বুধবার সকালে তারা কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর শহরের হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। বিকেলে সৈকতে গেলে সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে এক যুবকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। আর তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় জোর করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

ওই নারীর অভিযোগ, তাকে শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করেন। তারপর নেয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে। সেখানে আবারও তাকে ধর্ষণ করেন একজন।

তবে মামলার তদন্তকারী ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আশিকসহ কয়েকজন ওই নারীর পূর্ব পরিচিত। অভিযোগকারী নারী তিন মাস ধরে কক্সবাজারে আছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

আসামিদের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গত শুক্রবার বিকেলে ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশের ছায়া তদন্ত চলছিল, এখনও অব্যাহত আছে। এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয় যে ভিকটিম তিন মাস ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন। আসামি আশিক, বাবু ওনার পূর্বপরিচিত এবং স্বামী-সন্তানসহ তিনি বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছিলেন।’

প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ঘটনা বেশ কিছু অংশ ‘সাজানো’ বলেও মন্তব্য করেন কক্সবাজার পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা জানান, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিকুল ইসলাম আশিকসহ কয়েক যুবকের পূর্বপরিচয় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারে আশিক নানান অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে র‌্যাব। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আশিকের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে, পাঁচ দফা তিনি জেল খেটেছেন। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত টানা আড়াই বছর জেলে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগও রয়েছে। হোটেল মোটেল জোনে আশিক তার অপকর্মের জন্য ৩০-৩২ জনের একটি অপরাধ চক্র তৈরি করেছে। তার কোনো রাজনৈতি পরিচয় নেই।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘প্রাথমিকভাবে আশিক ওই নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আশিক ও তার সহযোগীরা কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় নানা সময়ে পর্যটকদের ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা আদায় করত। একইভাবে ঘটনার একদিন দুইদিন আগে ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আশিক।

‘সেই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই নারীকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যায় আশিক ও তার সহযোগীরা। এরপর জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে তাকে ধর্ষণ করে সে।’

ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী আরও কেউ ধর্ষণ করেছে কি-না, এ বিষয়ে আশিক নিশ্চিত না বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘প্রথমে ভুক্তভোগী নারীকে আশিক ও তার সহযোগীরা সিএনজিতে করে একটি ঝুপরি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে চায়ের দোকানের পেছনে ওই নারীকে তার সহযোগীদের কাছে রেখে আশিক তার মোটর সাইকেল আনতে নিজ বাসায় গিয়েছিল। এর মাঝে তার সহযোগীরা নারীকে ধর্ষণ করেছে কি না তা সে জানে না।’

এ বিভাগের আরো খবর