ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ নামে লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় চার জন মালিকসহ আট জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত নৌ আদালত এই পরোয়ানা জারি করেছে।
রোববার বিকেলে মামলা দায়েরের পর তা আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন নৌ আদালতের হাকিম (বিশেষ মহানগর হাকিম) জয়নাব বেগম।
নৌ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর বেল্লাল হোসাইন বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, 'লঞ্চের চার মালিকসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন ও শুনানি করেছি। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন।'
মামলার ৮ আসামি হলেন- লঞ্চের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামিম আহম্মেদ, মো. রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।
এর আগে দুপুরে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে অবস্থিত নৌ আদালতে মামলা করেন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান। এ ছাড়া দুর্ঘটনার মামলা হওয়ায় আইন অনুযায়ী আজ রোববারই অভিযান-১০ লঞ্চের ফিটনেস সনদ, নিবন্ধন ও মাস্টার-চালকদের সনদ স্থগিত করা হবে বলে নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে বলেও জানান রাষ্ট্র পক্ষের এই আইনজীবী।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে লঞ্চে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকা, জীবন রক্ষাকারী পর্যাপ্ত বয়া ও বালুর বাক্স না থাকা, ইঞ্জিন কক্ষের বাইরে অননুমোদিতভাবে ডিজেল বোঝাই অনেক ড্রাম রাখা এবং রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা ও সিলিন্ডার রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, এসব জ্বালানি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিপজ্জনকভাবে রাখা হয়েছে।
মামলার বাদী হয়েছেন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান। অধিদপ্তরের বরিশালের পরিদর্শকের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে মামলাটি করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে এ ঘটনায় মৃত্যুজনিত দায় নির্ধারণ করে সম্পূরক মামলা করা হবে বলেও জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। ঢাকা থেকে প্রায় ৮০০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি বরগুনা যাচ্ছিল। আগুনে পুড়ে ও নদীতে ঝাঁপ দিয়ে অন্তত ৩৮ যাত্রী নিহত হন। এছাড়াও ৫১ জন যাত্রীর এখনো পর্যন্ত কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।