বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেয়ার কিনুন, ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার: বিএসইসি চেয়ারম্যান

  •    
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৭:৩৬

‘পুঁজিবাজারের সূচক বাড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই সূচক কমবে। আমাদের বিনিয়োগকারীরা সূচক পড়লেই আতঙ্কিত হয়ে যান। কিন্তু পড়তি বাজারে কেনার সময়। এ সময় শেয়ার কিনলেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।’

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম শোনালেন আশ্বাসবাণী। তিনি আতঙ্কিত না হয়ে নতুন করে শেয়ার কেনার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, শেয়ার কিনলেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

বলেছেন, এখন শেয়ারের দাম কম বলেই শেয়ার কেনা উচিত। কারণ যখন দাম বাড়বে, তখন মুনাফার হার কমে যাবে।

শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘এসএমই খাতের উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ পরামর্শ দেন।

এ বছরের বেশি চাঙ্গাভাবের পর গত সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসেরও বেশি মন্দার বিষয়টি অস্বাভাবিক নয় বলেই মনে করেন বিএসইসি প্রধান। বলেন, ‘পুঁজিবাজারের সূচক বাড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই সূচক কমবে। আমাদের বিনিয়োগকারীরা সূচক পড়লেই আতঙ্কিত হয়ে যান। কিন্তু পড়তি বাজারে কেনার সময়। এ সময় শেয়ার কিনলেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।’

২০২০ সালের মাঝামাঝি শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পুঁজিবাজার এক দশকের মন্দাভাব কাটিয় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। জুন থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত টানা উত্থানের পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার সংশোধনে প্রায় ৯০০ পয়েন্ট সূচক কমে।

দৈনিক লেনদেন ২ হাজার কোটি টাকার ঘর থেকে নেমে আসে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে।

৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট। নিয়মিত লেনদেন হতে থাকে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

তবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দর সংশোধন শুরু হয়। এর মধ্যেও একটি নতুন প্রবণতা দেখা দেয়। সংশোধনে স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদরে পতন হলেও বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বাড়ার কারণে সূচক বাড়তে থাকে।

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই সংশোধনে যায় পুঁজিবাজার, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পতন আরও বেশি হয়

এর মধ্যে ২০১০ সালের মহাধসের পর সূচক প্রথমবারের মতো অক্টোবরে ৭ হাজার ৩০০ পয়েন্টের ঘর অতিক্রম করে। তবে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারও দর হারাতে থাকে।

এই পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের শেষে গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। শেয়ারদরও নেমে এসেছে অনেকটাই।

গত ১০ অক্টোবর থেকে সূচক কমেছে ৬৬৫ পয়েন্টের বেশি। এর মধ্যে গত ১১ কর্মদিবসে সূচক পড়েছে ৯ দিন। এই কয়দিনে সূচক পড়েছে ৩৪৬ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজারে এই দরপতনের পেছনে বাজার নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতভিন্নতার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বাজারে ব্যাংকের যে বিনিয়োগসীমা, সেটি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নাকি বাজার মূল্যে বিবেচনা হবে, বন্ডে বিনিয়োগ এই সীমার ভেতরে থাকবে, না কি বাইরে থাকবে- এই বিষয়ে একমত হতে পারছে না দুই পক্ষ।

গত ৩০ নভেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা না হওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে আরও একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠক শেষে আরও একটি আলোচনার কথা জানানো হয়। চলতি মাসে বা আগামী জানুয়ারির শুরুতে বৈঠক শেষে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে বলে জানানো হয়।

তবে সেদিনের আলোচনায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। বড় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার না কিনে পর্যবেক্ষণে থাকছেন- এ বিষয়টি স্পষ্ট।

পুঁজিবাজারে সূচকের ওঠানামা থাকলেও ২০১০ সালের ধসের কোনো আশঙ্কা নেই বলেও আশ্বাস দেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা কঠোরভাবে পুঁজিবাজার মনিটর করি। এখানে ২০১০ সালের ধসের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ নেই। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতিনিয়তই দেখভাল করতে হয়। প্রয়োজনে বিশেষ নিরীক্ষাও করতে হয়। তখন এমন সব তথ্য সামনে আসে, যাতে আমরা নিজেরাই ভয় পেয়ে যাই। তবে এ ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তাই নেয়া হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা পাচারকারীদের শাস্তি দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।‘

পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের জন্য এই অবস্থায় বিএসইসিকেও দোষারোপ করছেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। তবে কে কোন শেয়ার কিনবে, কোনটি বিক্রি করবে- এটি বিএসইসির দেখার বিষয় নয় বলে জানিয়ে দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘কে কোন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করল সেটি আমাদের দেখার বিষয় না কিংবা কারও পোর্টফোলিও ম্যানেজ করি না। অথচ বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলেই কমিশনকে দোষারোপ করে। লাভ করলে কিছু বলে না।’

অনুষ্ঠানে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ডিএসইর পরিচালক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মাসুদুর রহমান, ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূইয়া, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল বক্তব্য রাখেন।

ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গতি ফেরানো জরুরি। এ জন্য ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে, এমন বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সুযোগ দেয়া উচিত। এদের সুযোগ দেয়া না হলে এই বোর্ডের লেনদেন গতি ফিরবে না।’

এই খাতের উন্নয়নে প্রথম দুই বছর কোম্পানিগুলোকে লভ্যাংশ প্রদানের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং আগামী বাজেটে ১৫ শতাংশ করের পরিবর্তে ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাবও করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সঞ্চলনায় ছিলেন দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের চিফ রিপোর্টার গিয়াস উদ্দিন। পত্রিকাটির এক বছর পূর্তিতে প্রতিনিধি সম্মেলনও করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর