ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অভিযান-১০ লঞ্চে গ্রামে ফিরছিলেন হাফেজ তুহিন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এসে লঞ্চে যখন আগুন ধরে যায়, আড়াই বছরের সন্তান তাবাসসুমকে নিয়ে স্ত্রীর হাত ধরে লাফ দিয়েছিলেন নদীতে।
নিজেরা তীরে উঠতে পারলেও হাত থেকে তাবাসসুম ফসকে যায় নদীতেই। কখন যে হাত ফসকে নদীতে হারিয়ে যায় মেয়ে তা টেরই পাননি বাবা তুহিন। এরপর শুক্র ও শনিবার সন্তানের খোঁজে কখনও হাসপাতালে, কখনও নদীতীরে ছুটছিলেন এ দম্পতি।
অবশেষে তারা মেয়ের সন্ধান পেয়েছেন। তবে জীবিত নয়, মেয়ের নিথর দেহ মিলেছে কফিনে। দাফনের আগমুহূর্তে শনিবার সকালে তারা তাবাসসুমকে শনাক্ত করেছেন।
তুহিন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার স্বজনরা জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত শিশু তাবাসসুমকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে খোঁজ নেন তারা।
সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলো বরগুনার সার্কিট হাউস মাঠে জানাজার পর সদরের পোটকাখালীতে দাফনের জন্য নেয়া হয়েছে। দৌড়ে সেখানে গিয়ে তারা কফিনের ভেতর শনাক্ত করেন শিশু তাবাসসুমের মরদেহ।
মরদেহ শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, তাবাসসুমের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘শিশু তাবাসসুমের মরদেহ তার পরিবার শনাক্ত করতে পেরেছে। তাই সরকারিভাবে দাফন না করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তাও দেয়া হয়েছে।’