বড় বড় ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের টাকার কিছু অংশ নৌপরিবহন খাতে এলে আরও ভালো সেবা দেয়া যেত বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা যে পয়সা দিয়ে এত বড় বড় ব্রিজ-কালভার্ট করছি, তার যদি কিছু অংশ আমাদের এখানে আসত, তাহলে আরও নিরাপদ সেবা দিতে পারতাম।’
শুক্রবার রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধদের দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এতে ৩৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা আমাদের নৌপরিবহনে আগে ঘটেনি। আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
পুড়ে যাওয়া লঞ্চ থেকে বেঁচে ফেরা এক ক্যাবিন বয় জানিয়েছেন রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর ইঞ্জিনরুমে আগুন ধরে যায়।
ইঞ্জিনরুমের পাশে সব লঞ্চেই রান্নাঘর বসানো হয়। এটি কাঠামোগত ভুল কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, লঞ্চের এই নকশা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ওভার নাইট এই নকশা পরিবর্তন করা কঠিন। নৌ অধিদপ্তরেরর মহাপরিচালকের সঙ্গে আজকেও আমার কথা হয়েছে। তিনিও আমার সঙ্গে একমত যে এই নকশা দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যাত্রীসেবা দেয়া খুব কঠিন। এ জায়গাটায় আমাদের ভাবতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু এই নকশার কারণে কোভিডকালীন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারিনি। এটি নিয়ে আমরা ভাবছি। ভবিষ্যতে সে রকম একটি পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।’
বিলাসবহুল লঞ্চের ডেকোরেশন নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিলাসবহুল লঞ্চ মানামি উদ্বোধন করতে গিয়েও আমি বলেছি, ডেকোরেশনে আমরা যে পরিমাণ প্লাস্টিকের জিনিসপত্র ব্যবহার করছি, এগুলো কতটুকু আমাদের জন্য নিরাপদ? এ জায়গায়ও আমাদের নজর দিতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘লঞ্চে ইলেকট্রিসিটির জন্য আমরা যে তারগুলো ব্যবহার করি, সেখানেও কিছু ঝুঁকি আছে। অনেকেই আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে দুর্বল কেব্ল ব্যবহার করি। এ জায়গায়ও আমাদের সতর্ক হতে হবে। আমরা কাজ করছি, কারণ এগুলো নিয়ে কাজ আগে কখনও করা হয়নি।’
আহতদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেহেতু আমাদের যাত্রী ছিল আমাদেরও একটি দায়িত্ব আছে। এখানে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা আমাদের দৃষ্টির বাইরে থাকবে না।’