কক্সবাজারে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ তোলা নারী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে তিনি এ জবানবন্দি দেন।
২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম।
আদালত ও তদন্তকারী নির্ভরযোগ্য সূত্র নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তদন্তকারী ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ওই নারী আদালতকে জানান, তার সন্তান জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। সন্তানের চিকিৎসার জন্য অন্তত চার লাখ টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা যোগাড় করতেই তিন মাস আগে তারা কক্সবাজারে আসেন। কক্সবাজারে তিন মাস ধরে তারা বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া করে থাকছেন বলেও জবানবন্দিতে জানান ওই নারী।
জবানবন্দিতে তিনি যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে সৈকত এলাকা থেকে তাকে অপহরণের বিষয়টি নেই বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে মামলার প্রধান আসামি আশিকুল ইসলামসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি।
ধর্ষণে অভিযুক্ত ইসরাফিল হুদা জয়া (বাঁয়ে) ও আশিকুল ইসলামজবানবন্দিতে তিনি বলেন, আশিক তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সে টাকা না দেয়ার কারণেই কক্সবাজারের একটি হোটেলের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার পর বিষয়টি কেবল র্যাবকে জানিয়েছিলেন বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন ওই নারী।
এদিকে, অভিযুক্ত আশিকসহ মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান।
তিনি শুক্রবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন তিনি ধর্ষণের শিকার। তাই তার সুবিচার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশিক পলাতক রয়েছে। আমরা তাকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি সে কক্সবাজার ছেড়ে পালিয়েছে। তবে সে বেশিদিন পালিয়ে থাকতে পারবে না।’
‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা চার আসামি হলেন কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত আশিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই, ইয়াবা ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা আছে। তার অন্যতম সহযোগী জয়ার বিরুদ্ধেও দুটি মামলা আছে। তারা মূলত কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তাদের গ্যাংয়ে অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন। তারা গ্রেপ্তারও হয়েছেন একাধিকবার।