শিক্ষককে চেয়ার ছেড়ে দিতে বলায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে একই শাখার কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী জিনাত আরা জেরিন।
তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের র্যাগ ডের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
জেরিন অভিযোগ করেন, সেখানে ক্যাম্পাসের শেখ হাসিনা হল শাখার সভাপতি সাবেরি আনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের জন্য চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন। এতেই হয় বিপত্তি। ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেরি আনোয়ার একই সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীকে ডেকে নিয়ে এসে তাকে হুমকি দিতে থাকেন।
জেরিন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তিনি ও সাবেরি আনোয়ার একই হলে থাকেন।
জেরিনের অভিযোগ, একপর্যায়ে সাবেরি আনোয়ার গিয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা তাকে মারধর করতে যান।
জেরিন জানান, ক্যাম্পাসের ৭৫তম ব্যাচের আকাইদ, উজ্জল, রেদোয়ান, রুদ্র ও রেদোয়ান তার ওপর হামলা চালান। সংঘাত এড়াতে কোনো দোষ না থাকার পরও ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। এর পরও তার হাতে ও পিঠে মারধর করেন ছাত্রলীগের ওই নেতারা।
জেরিন বলেন, ‘আমার ওপর হামলা করেছেন সাবেরি আনোয়ার ও উজ্জ্বল। তারা আমার হাতে ও পিঠে মারধর করেন। এ সময় একজন আমার পেটে লাথি মারে, তবে সেটা কে আমি দেখার আগেই মাটিতে পড়ে যাই। এরপর মৌখিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অভিযোগ করি। এ সময় ওই মারধরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমি চিকিৎসা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনার প্রতিবাদে আমাদের মানববন্ধন করতে দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা মানববন্ধন করতে চাইলেও হলের গেট খোলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আমাদের হলের গেট বন্ধ করে রাখা হয়। আমি আমার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে এখনও কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না।’
জেরিন বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব। এ জন্য আমি অভিযোগ লিখেও রেখেছি। আগামীকাল লিখিত অভিযোগ দেব।’
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগ নেত্রী সাবেরি আনোয়ারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরেক অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা রেদোয়ান রহমান বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বানোয়াট। যে অভিযোগ করেছে সেই মেয়ে একজন নাটকবাজ। আমরা কোনো হামলা করিনি। ওখানে ওদের ব্যাচের মধ্যে একটা ঘটনা ঘটেছিল। আমরা কিছু করিনি। তবে আমরা ওখানে ছিলাম।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হারুন-অর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে, যারা একই হলে থাকে। তবে অন্য ছাত্রী জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে গতকাল বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তবে ওই ছাত্রী এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুসারে ব্যবস্থা নেব।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু জেরিন অভিযোগ করেছে, আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। এ জন্য একটি কমিটি করা হবে।’