ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চের আগুনে দগ্ধদের যতদূর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব সেটা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. জাহিদ মালেক।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ভর্তি লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধদের দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
লঞ্চের আগুনে দগ্ধ ও নিহতদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি ইঞ্জিনে আগুন লাগে। ওখানে বেশ কিছু সিলিন্ডার ছিল। যেগুলো ব্লাস্ট করার পর আগুন ছড়িয়েছে। এতে অনেক লোক দগ্ধ হয়েছে, দোয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়েছে, মারা গেছে, শ্বাসনালী দগ্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত যা খবর পেয়েছি ৩৫ জন মারা গেছে। ৩৫ জনের লাশ শনাক্ত করা গেছে। আরও বাড়তে পারে। আমি হোম মিনিস্টারের সঙ্গে আলাপ করেছি, উনার সম্পূর্ণ তথ্য জানতে পারেননি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বরিশাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি আছে ৮১ জন, তাদের মধ্যে ১০ জনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। ঢাকায় যারা আসছে, তারা ক্রিটিকাল কন্ডিশনে আছে। অনেকের শরীর ৩০, ৪০ ও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। শ্বাসনালীও পুড়ে গেছে। তাই সকলেই কম বেশি ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছে। আমাদের যতদূর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব সেটা দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি মালদ্বীপ থেকে আজই এসেছি। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি এখানে এসেছি। বরিশালের চিকিৎসা যাতে আরও ভালো হয় সেজন্য একটা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম পাঠানো হয়েছে। তারা পথে আছে। ওষুধপত্র যা যা লাগে তা এখান থেকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা মো. রায়হান নিউজবাংলাকে জানান, রাত ৩টা ২৮ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস খবর পায়। ৩টা ৫০ মিনিটে ১৫টি ইউনিট আগুন নেভানো শুরু করে। সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
লঞ্চের যাত্রী সোলাইমান আকন বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দে লঞ্চে আগুন ধরে যায়। লঞ্চের পেছনের অংশ থেকে তৃতীয় তলার সামনে পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’সাইদুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী জানান, প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই লঞ্চ থেকে নদীতে লাফ দেন।
এই লঞ্চে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানান কেবিন বয় ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘ওপরে থাকা বেশির ভাগ যাত্রী নদীতে লাফ দিয়েছে। যারা ঘুমিয়ে ছিল তারা সবাই মারা গেছে।’
৫ বিভাগীয় শহরে হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট
বরিশালে দগ্ধদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা দেশে বিভিন্নভাবে অগ্নিদগ্ধদের ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়টি চিন্তা করে ১৫ দিন আগে একনেক সভায় একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। সেটি হচ্ছে দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে পাঁচটিতে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পাঁচটি বার্ন ইনস্টিটিউট করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় একটি আছে। পরে আরও দুই বিভাগে দুটি ইনস্টিটিউট করা হবে। ইনস্টিটিউটগুলোতে আইসিইউ, এইচডিইউসহ পোড়া রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সব ব্যবস্থা রাখা হবে, যাতে তাদেরকে ঢাকামুখী হতে না হয়।’