বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাকে মধু আর হলুদে মোড়া ফসলের মাঠ

  •    
  • ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:২১

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। মধু চাষ করে একদিকে যেমন চাষিরা লাভবান হন, অন্যদিকে মৌমাছি সরিষার পরাগায়নে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। মৌমাছির মাধ্যমে সরিষার ফলন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।’

সরিষা ফুলের ম-ম গন্ধে মাতাল ফসলের মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদের সমারোহ। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত ক্ষেতখামার।

নওগাঁর মৌচাষিরা তাই এখন সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত।

ক্ষেতের পাশেই বসানো হচ্ছে মধু সংগ্রহের বক্স। একদিকে মধু সংগ্রহ, পাশাপাশি বাড়ছে সরিষার ফলনও।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্য ঠিক হয়েছে।

এর মধ্যে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চারজন মৌচাষি এসেছেন সাপাহার উপজেলায়। এই এলাকার মাটির গুণগত মান অনেক ভালো। এখানকার সরিষা ফুলের মধু অন্য জায়গার তুলনায় সুমিষ্ট। তাই মধু সংগ্রহের জন্য এই অঞ্চলকেই বেছে নিয়েছেন তারা। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বেশি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন তাদের।

টাঙ্গাইল থেকে আসা মৌচাষি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘গত বছরও আমরা এসেছিলাম। এবার ১০ দিন হলো এসেছি। আমি ৭০টি বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছি। এখন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

জিয়াউর জানান, শীতকালে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মধু সংগ্রহ করেন। বর্তমানে অন্য এলাকার তুলনায় সাপাহারে সরিষার চাষ অনেক বেশি। নদীর মাটিতে পলি থাকায় ফুলের মানও ভালো। তাই মধুও বেশি মিষ্টি।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার তুলনামূলক বেশি মধু পাওয়া যাবে। ছবি: নিউজবাংলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা মৌচাষি মিঠু হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি মৌবক্সে আটটি প্লেট থাকে। আমরা এক থেকে দেড় মাস অবস্থান করব এই এলাকায়। এই সময়ের মধ্যে পাঁচবার মধু সংগ্রহ করব। প্রথমবার ও শেষবারে মধু কম পাওয়া যায়। কিন্তু মাঝের তিনবার পর্যাপ্ত পরিমাণে মধু সংগ্রহ সম্ভব।’

মিঠু আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার তুলনামূলক বেশি মধু পাওয়া যাবে।

কবির হোসেন নামে আরেক মৌচাষি বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় মধু সংগ্রহ করি। এ জন্য আমরা নিজস্ব পদ্ধতি অবলম্বন করি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে আমরা মৌচাষে আরও উন্নতি করব।’

সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবার ৩৮০টি মৌবক্সে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন সম্ভব। ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে দেড় মাসে ১ কোটিরও বেশি টাকার মধু বিক্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা স্থানীয়ভাবে মৌচাষিদের প্রশিক্ষণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই চার ইউনিয়নের চার কৃষককে প্রশিক্ষণ শেষে মৌবক্স দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষকের মাঝে বাছাই করে মৌচাষি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। স্থানীয় চাষিদের এ বিষয়ে আগ্রহী করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে। মধু চাষ করে একদিকে যেমন চাষিরা লাভবান হন, অন্যদিকে মৌমাছি সরিষার পরাগায়নে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে। মৌমাছির মাধ্যমে সরিষার ফলন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়।’

এ বিভাগের আরো খবর