আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের আশা-ভরসার জায়গা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান শীর্ষ সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। আবদুর রাজ্জাক স্মৃতি সংসদ ও ফাউন্ডেশন এ সভার আয়োজন করেন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন মিষ্টভাষী। তার মতো এত কর্মীবান্ধব নেতা আমি আর দেখিনি। তিনি কাউকে কখনো না করেননি, সেটা সামর্থে্য কুলাক বা না কুলাক। তিনি ছিলেন কাজের প্রতি খুবই নিবেদিতপ্রাণ। তার সারাটা জীবনই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছে। সংগ্রামের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নির্যাতনেরও শিকার হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগেকে ধ্বংস করতে টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করেন। হাজার হাজার নেতাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেন। এই সময় রাজ্জাক ভাইকেও গ্রেপ্তার করে দীর্ঘকাল জেলে আটকে রাখা হয়। এই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে তার এগিয়ে চলা ও বেড়ে ওঠা।’
হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে শেখ হাসিনার দেশে প্রত্যাবর্তনের আগ পর্যন্ত ছিল আওয়ামী লীগের দুঃসময়। এসময় নেতাকর্মীদের আস্থা, ভরসার জায়গায় ছিলেন গুটি কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্য আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন অন্যতম।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘১৯৬৩ সালে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকে বাংলার গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি সংগঠন গঠন করেছিলেন। সেই দলের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন সিপাহসালার হিসেবে কাজ করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘১৯৬৩ সাল থেকে আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তাকে আমি প্রতি মুহূর্তে স্মরণ করি।’
সমাপনী বক্তব্যে আব্দুর রাজ্জাকের জ্যেষ্ঠ সন্তান ও সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘আমার বাবা আব্দুর রাজ্জাক বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে মানুষের জন্যে কাজ করে গিয়েছিলেন। তার আদর্শকে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।’
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাহলুল মজনুন চুন্নুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা, রাকসুর সাবেক জিএস খন্দকার জাহাঙ্গীর কবির রানা, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেদুর রহমান খোকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস প্রমুখ।