ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্র মেহেদি হাসান মিরাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বন্ধু গালিবকে সন্দেহ করছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার দুরামারি এলাকায় বাড়িতে মেহেদির মা মাহফুজা ও বাবা আব্দুল মালেক নিউজবাংলার কাছে এই দাবি করে হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
মেহেদির মা মাহফুজা জানান, বুধবার তার ছেলেকে পাশের বাড়ির গালিব ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে মেহেদির নানা মেহেদিকে খুঁজতে বের হন। মেহেদির সঙ্গে তার নানার দেখাও হয়।
তিনি জানান, সে সময় মেহেদি তার নানাকে বলেন, ‘তুমি যাও আমি একটু পরে যাচ্ছি।’ এর কিছুক্ষণ পরই দুরামারি এলাকার শামিমের হোটেলের পাশে মেহেদিকে মেরে ফেলে রাখার তথ্য পাওয়া যায়।
মেহেদির মা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে বাঁচার চেষ্টা করেছিল। তাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে আহত অন্য দুজনকে আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গালিব যদি তাৎক্ষণিক চিৎকার দিতো; তাহলে অন্য মানুষ এসে আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যেত। কিন্তু তারা চিৎকারও করেনি। আমার ছেলেরে হত্যাকারীদের সুষ্ঠ বিচার চাই।’
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মেহেদির বাবা। তিনি ছেলের হত্যার বিচার দাবি করেন।
এদিকে মেহেদির হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছেন সহপাঠীরা। কিন্তু তাদের আশঙ্কা, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারণে তদন্ত প্রক্রিয়া ধামাচাপা পরে যেতে পারে।
মেহেদির সহপাঠী আরমান বলেন, ‘মেহেদি এমন এক ছেলে যে, ক্লাসে কোনো দিন কারও সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথা বলেনি। আমার মনে হয় না, তার কারও সঙ্গে শত্রুতা থাকতে পারে। আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ফিরোজ জামান জুয়েল জানান, সংঘর্ষ শেষে ঘটনাস্থল থেকে নিহত মেহেদির সঙ্গে আহত অবস্থায় আরমানকে ও কিছুটা অচেতন অবস্থায় গালিবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরমান বেশ কিছুটা আহত হলেও গালিবের শরীরে কোনো ক্ষত পাওয়া যায়নি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম জানান, মেধাবী ছাত্র মেহেদির হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে আদালতে সোপর্দ করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের দুরামারি এলাকায় স্কুলছাত্র মেহেদীকে বাসায় থেকে বন্ধু পরিচয় দিয়ে ডেকে নিয়ে যান গালিব নামের একজনসহ কয়েকজন।
ঘণ্টা খানেক পর স্থানীয় লোকজন মেহেদির রাস্তার ধারে পড়ে থাকার খবর পায় পরিবার। স্বজনরা উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় আরমান নামে আরো একজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরমান ও গালিব সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই।