৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও বিনিয়োগকারীরা তাতে খুশি হতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
কোম্পানিটি গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৬০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১৪০ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ১৪ টাকা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নগদ। বাকি ২০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রতি ১০টি শেয়ারের বিপরীতে দুটি দেয়া হবে বোনাস শেয়ার।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২০ সালের জুলাই থেকে গত জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫২ টাকা ১৮ পয়সা। আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ।
২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫ টাকা ৪৩ পয়সা। ওই বছর শেয়ার প্রতি ৩ টাকা করে লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
কোম্পানিটি লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ঠিক করেছে আগামী ১৮ জানুয়ারি। অর্থাৎ যারা লভ্যাংশ নিতে চান, তাদেরকে সেদিন শেয়ার ধরে রাখতে হবে।
লভ্যাংশ চূড়ান্ত করতে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে আগামী বছরের ১২ মার্চ।
যে কারণে প্রশ্ন
শেয়ার প্রতি আয়, লভ্যাংশ-সবই ভালো, তার পরেও বিনিয়োগকারীরা খুশি নাও হতে পারে অন্য একটি কারণে।
২০১৬ সালের পর কোম্পানিটি কখনও শেয়ার প্রতি ১০ টাকার বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। আর বোনাস শেয়ার শেষ হবে দিয়েছে, সেটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে নেই।
এর পরেও পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে কোম্পানিটির শেয়ারধারীরা দর পড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কার কথা লেখছেন।
এর কারণ, কোম্পানিটির লভ্যাংশ নিয়ে এর চেয়ে বেশি উচ্চাশা।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে আগামী এক বছরের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। অর্থাৎ ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের শেয়ার সংখ্যা বাড়াতে হবে ৩০ গুণ। এটি করতে হলে বোনাস, রাইট বা রিপিট আইপিও ছাড়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন, বেশ ভালো পরিমাণ বোসান শেয়ার পাওয়া যাবে। এই আশায় গত সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারদর ক্রমেই বাড়ছিল।
গত ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারদর ছিল ১ হাজার ৬৪৮ টাকা ৭০ পয়সা। সেখান থেকে গত ২২ ডিসেম্বর পৌঁছে ৩ হাজার ৭৮০ টাকা।
যদিও লভ্যাংশ ঘোষণার আগে টানা দুই দিন কমে শেয়ারদর এখন দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩২২ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থাৎ প্রত্যাশিত লভ্যাংশ নাও আসতে পারে, এমন ধারণা থেকে গত দুই দিনে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন অনেকেই।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে শেয়ার সংখ্যা সবচেয়ে কম এই কোম্পানিটির। যে কারণে লভ্যাংশের পরিমাণ খুব আকর্ষণীয় না হলেও শেয়ারদর থাকে সব সময় বেশি।
৯ লাখ ৯৪ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৫১ শতাংশ ধারণ করে আছে সরকার। আরও ১৫.০৪ শতাংশ ধারণ করে আছেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা।
বাকি ৩৩ টাকা ৯৬ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ১০.৪৮ শতাংশ। বাকি ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯১টি শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।