বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের ভায়াডাক্ট, অর্থাৎ পিলারের ওপর যে পথে রেল বসবে-সেটি উত্তরা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
বাকি পথেও ভায়াডাক্ট বসানোর কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ, তবে নিরবচ্ছিন্নভাবে পুরো পথে বসানো যায়নি। তবে আগামী জানুয়ারির মধ্যেই বাকি পথেও নিরবচ্ছিন্নভাবে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট বসে যাবে।
বৃহস্পতিবার মেট্রোরেল নির্মাণ কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড বা ডিএমটিসিএলের ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের (মেট্রোরেল লাইন-৬ বা এমআরটি -৬) আওতায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো রেলের রুটের নির্মাণকাজ চলছে। শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এই ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রোরেল চলেছে। এই অংশের রেললাইন, বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন এবং স্টেশনের যাবতীয় প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট এই রুটে পরীক্ষামূলক মেট্রোরেল চলে।
গত ১২ ডিসেম্বর জানানো হয়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর, অর্থাৎ আর এক বছর পর এই পথে যাত্রী নিয়েই ছুটবে ট্রেন। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে ২০২৩ সালের মধ্যে।
দুঃসহ যানজটের এই নগরে চলাচলের দুর্ভোগ মেট্রোরেল কিছুটা লাঘব করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ জন্য এই প্রকল্পটি নিয়ে বেশ আগ্রহ আছে মানুষের।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল-৬ রুটে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রতি ৫ থেকে ১০ মিনিট পরপর ছেড়ে দেবে এক একটি ট্রেন। ট্রেনের প্রথম সেট গত এপ্রিলে ঢাকায় ডিপোতে পৌঁছায়। এসব ট্রেনের প্রতিটিতে ছয়টি গাড়ি বা কোচ রয়েছে।
স্টেইনলেস স্টিলের কোচগুলোর ভেতরে দুই পাশে লম্বালম্বি বসার আসন রয়েছে। একটি ট্রেনের দুই প্রান্তের দুটি কোচকে বলা হচ্ছে ট্রেইলার কার, যা ট্রেনকে চালিয়ে নিয়ে যাবে। এতেই চালক থাকবেন।
এক সেট ট্রেন একবারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী বহন করতে পারবে। মতিঝিল পর্যন্ত রুটে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী বহন করবে মেট্রোরেল।
মোট ১৬টি স্টেশনে থামবে ট্রেনগুলো। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারবে এ ট্রেন।
ট্রেনগুলো তৈরি করছে জাপানের কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
তবে এই একটি রুট নয়, ঢাকার নগর পরিবহনব্যবস্থা পাল্টে দিতে আরও পাঁচটি রুটে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঢাকাকে ঘিরে সব মিলিয়ে ১২৮ কিলোমিটারের নেটওয়ার্ক হবে মেট্রোরেলের।