মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আবারও মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে জীবিত ও প্রয়াত প্রায় ১০০ মুক্তিযোদ্ধাকে চরমোনাই পিরের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেয়া হয়।
রাজধানীর পুরানা পল্টনে আইএবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটির কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভাগ। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীক।
চরমোনাই পির বলেন, ‘মানুষ এখনও স্বাধীন নয়, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। নাগরিক অধিকার ও ভোটাধিকার খর্ব করা হয়েছে। এটা স্বাধীনতার চেতনা পরিপন্থি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই সময়েও এ দেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত। মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আবারও মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে।
‘দেশে চরম বৈষম্য চলছে। ইনসাফ নেই, সামাজিক মূল্যবোধ বলতে নেই। অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে মুক্ত হতে হবে। এ জন্য শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
চরমোনাই পির বলেন, ‘দল-মত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করেছিল। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর চেতনার নামে দেশপ্রেমিক ও ইসলামপন্থিদের দাবিয়ে রাখতে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহিম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রণাঙ্গনের যোদ্ধাদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেয়াই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়, বরং মুক্তিযোদ্ধারা যে জন্য সংগ্রাম করেছিল, মানুষের মুক্তির জন্য, নাগরিক ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, তা আজও প্রতিষ্ঠা হয়নি।
'মুক্তিযুদ্ধের প্ল্যাটফর্মটি ছিল জাতীয় ঐক্যের। কিন্তু ’৭২-এ এসে তা ভেঙে দেয়া হয়েছে।
'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলাম সাংঘর্ষিক নয়। আমরা ঈমানি চেতনা ও শহীদি তামান্না নিয়েই যুদ্ধ করেছিলাম। এখন চেতনার নামে মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা যারা করছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের ‘মু’-এর অর্থও জানেন না। কাজেই আমি মুসলমান আগে, তারপর বাঙালি।'
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দেলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
আরও বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী প্রমুখ।