নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
অবাধ, নিরেপক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের দাবি এবং নেতাকর্মীদের হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।
উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ঘোষবাগ কাদেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে কবিরহাটের উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদে ভোট।
বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মিরন বলেন, তার নির্বাচনি ইউনিয়ন সীমান্তঘেঁষা হওয়ার কারণে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে আনরস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল উদ্দিন বাবুল বলেন, ‘আমার মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্য হয়েছে । সেটা সবাই জানেন। জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ‘ঠেলি খেলা’ (গায়ের জোর) নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকা ডুববে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
ধানসিঁড়ি ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রহমত উল্লাহ বাহার বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যেই নির্বাচিত হোক, তাকেই গ্রহণ করব।’
ঘোষবাগ ইউনিয়নে অটোরিকশা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কবিরহাট এসে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে বক্তৃতা দেয়ার সময় বলেন ঠেলি খেলতে। একজন জেলা নেতা কী করে এমন বক্তব্য দেন? সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে ব্যাপক সহিংসতা হবে। যার দায়ভার তাদেরকে নিতে হবে। সাত ইউনিয়নের ৫৯টি কেন্দ্রের সবগুলোই ঝুঁকিপূর্ণ।’
ধানশালিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাহাব উদ্দিনের প্রতিনিধি আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিপক্ষ বিভিন্নভাবে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম সাহেব কী করে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেন, তা বোধগম্য না। সরকার দলের প্রার্থীদের হুমকির মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন।’
কবিরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আলাবক্স তাহের টিটু বলেন, ‘নৌকার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের লোক। এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে গণজোয়ার দেখা দিয়েছে। প্রশাসন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে বলে আশাবাদী। আচরণবিধি ভঙ্গের অনেক ঘটনা ঘটেছে। সরকার দলীয় লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন।বাটইয়া ইউনিয়ন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের নিয়ম নীতি আছে। তা মানা হচ্ছে না। যুবলীগ নেতাকে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কী করে বহিষ্কার করেন? এটা দলের গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন। এবার মনোনয়ন বাণিজ্য অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল উদ্দিন বাবুল অভিযোগ করে বলেন, ‘মনোনয়ন দেয়ার জন্য তার কাছে ৪০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন কবিরহাট পৌরসভার মেয়র ও কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হান।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাটের মেয়র জহিরুল হক রায়হান বলেন, ‘এটা অবান্তর কথা। ওনার নাম পরিবর্তন হয়েছে। তাই যার তার বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তা বলে বেড়াবেন, সেটা ওনার ব্যাপার। উনি সম্পর্কে আমার মামা হন। আমি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি না।’