ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে মাদারীপুর জেলা শহর ও এর আশেপাশের উপজেলা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে যানবাহন চলাচলে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। সড়কে বাতি জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এ ছাড়া দিনে শীত কিছুটা কম পড়লেও রাতে এর তীব্রতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
গেলো এক সপ্তাহের মধ্যে দৃষ্টিসীমা সবচে কম ২০০ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে বৃহস্পতিবার।
স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুরে গত কয়েকদিন ধরেই দিনে হালকা কুয়াশা পড়ে আসছে। কিন্তু বুধবার রাতে ঘনকুয়াশা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল পুরো জেলা। দেখা মেলেনি সূর্যের। এরপর থেকে কুয়াশা কিছুটা কমতে শুরু করলেও কমেনি শীতের তীব্রতা।
এমন পরিস্থিতিতে অসহায় শীতার্তদের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমান খাতুন।
মাদারীপুর পৌর শহরের শকুনী লেকপাড়ে হাঁটতে বের হওয়া নির্মল সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন খুব ভোরে লেকপাড়ে হাঁটতে আসি। কয়েকদিন ধরে কিছুটা কুয়াশা ছিল। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) ভোরে যে পরিমাণে কুয়াশা পড়েছে, তা এই মৌসুমে প্রথম। এত কুয়াশা আমার নজরে পড়েনি। দুই হাত সামনের কিছুও দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে লোকজনও কম হাঁটতে এসেছে।’
সড়কে বাতি জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন
কলেজ রোড এলাকার বৃদ্ধা সুরুজ বাঙালি বলেন, ‘কুয়াশার সাথে এত শীত আগে দেখিনি। এতদিন জানতাম কুয়াশা বেশি পড়লে শীত কম হয়, কিন্তু এখন হচ্ছে তার উল্টোটা।
‘প্রকৃতিতে যে পরিবর্তন আসতেছে, এটা তারই প্রমাণ। আর এমন বিচিত্র আবহাওয়ার কারণে আমাদের সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া বাড়তে শুরু হয়েছে। এত শীত-কুয়াশা পড়লে আমাদের মতো বৃদ্ধাদের ভীষণ কষ্ট ভোগ করতে হয়।’ বলেন তিনি।
নিউজবাংলাকে মাদারীপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুর রহমান সান্টু বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মাদারীপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত সপ্তাহ জুড়ে ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করেছে। আর কুয়াশার পরিমাণ অন্য দিনের চেয়ে বেশি পড়েছে। গেলো এক সপ্তাহের মধ্যে দৃষ্টিসীমা সবচে কম রেকর্ড করা হয়। বৃহস্পতিবার দৃষ্টিসীমা ছিল ২০০ মিটার।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘মাদারীপুরে শীতের তীব্রতা আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন কিছুটা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রতি বছর সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিত্তবানদের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ায়। এবারও সবাইকে শীতার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান করছি।’