একই দলের নেতা হলেও এবারের নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া তৈমূর আলম খন্দকারে পাশে নেই গত বারের ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান।
বিএনপির ব্যানারে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে লড়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের দুজনেরই। এর মধ্যে ২০১১ সালের নির্বাচনে ভোটের আগের দিন সরে দাঁড়ান তৈমূর।
আর ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিএনপি ধানের শীষ তুলে দেয় দলের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খানের হাতে। আইভীর বিরুদ্ধে হার দেখতে হয় তাকেও।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি আগেই জানিয়ে দেয়, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনেক নির্বাচনের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না তারা।
এরপরও স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন তৈমূর ও সাখাওয়াতসহ বিএনপির পাঁচ নেতা। পরে তৈমূর ছাড়া বিএনপি নেতাদের সবাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন দলীয় নির্দেশে নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের কথা জানান সাখাওয়াত হোসেন।
এতে আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলম।
মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী বিএনপি নেতাদের তিন জনই তৈমূরকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি সাখাওয়াত বলছেন, দল থেকে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। দলীয় নির্দেশের বাইরে কিছু করবেন না।
নিউজবাংলাকে সাখাওয়াত বলেন, ‘আমি গতবার দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এবারও মনোনয়ন কিনেছিলাম প্রার্থী হতে, কিন্তু দল এই নির্বাচন কমিশন ও সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। একই সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এ কারণে আমি দলের সিদান্তের বাইরে যেতে পারিনি। কারণ, আমার কাছে দল সব চেয়ে বড়।’
তৈমূর প্রসঙ্গে সাখাওয়াত বলেন, ‘তিনি নির্বাচন করছেন সেটা উনার বিষয়। দল যদি তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলে, তাহলে আমরা যাব, নয় তো নয়। কারণ, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে আমি যেতে পারব না। এ ছাড়া, তৈমূর যে ফরম্যাটেই নির্বাচন করুক, তার সঙ্গে থাকব না।’
নির্বাচনি প্রচারণায় সাখাওয়াতকে পাবেন কি-না, এমন প্রশ্নে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম বলেন, ‘সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দলের নেতারাও তার সঙ্গে কথা বলেছেন।’
এবারের নির্বাচনে নিজের সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রথমবার আমি একটা দলের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। দল নির্দেশ করেছিল, তাই আমি বসে গিয়েছিলাম। কারণ আমি সুবিধা নেয়া নেতা না, আমি বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে দলটা করি। দল আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে।
‘২০১৬ সালে দল বলেছিল, কিন্তু আমি প্রার্থী হইনি। তবে এবার তো এখানে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই, এবার জনগণের সিদ্ধান্ত। প্রতিটি জিনিসের মৌসুম থাকে, এবার হলো স্বতন্ত্রের মৌসুম।’