ঢাকা থেকে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়া এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে হোটেলের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের ভাষ্য, ওই দুই যুবক হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও ইসরাফিল হুদা জয়া। আরেকজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
র্যাব জানিয়েছে, আশিক চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তিনি ছিনতাই, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর আশিকের নেতৃত্বে কয়েকজন এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এই মামলায় তিনি জেলে ছিলেন। চার মাস আগে জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা যায়।
আশিক এলাকায় মাদক কারবার ও যৌনকর্মী সরবরাহের কাজ করেন। জয়া তার অন্যতম সহযোগী।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেল থেকে বুধবার রাত দেড়টার দিকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়।
ওই নারী নিউজবাংলাকে জানান, তিনি স্বামী ও আট মাসের সন্তানসহ বুধবার বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা-কাটাকাটি হয়।
সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে তারা তাকে ধর্ষণ করেন।
এরপর তাকে জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা তাকে আবার ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি কাউকে জানালে স্বামী-সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে ঘরে বন্ধ করে চলে যান।
পরে তিনি জানালা দিয়ে এক যুবকের সাহায্য নিয়ে নিজেকে উদ্ধার করেন। র্যাবের সহায়তায় তার স্বামী-সন্তানকে পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার পর জিয়া গেস্ট ইনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে র্যাব।
এতে দেখা যায়, তিন যুবক অটোরিকশায় এক নারীকে নিয়ে আসেন। দুজন ওই নারীর সঙ্গে থাকেন। আরেকজন হোটেলের রুম বুকিং দেন। সে সময় রিসিপশনে হোটেলের ব্যবস্থাপক ছোটন ছিলেন।
এরপর তিন যুবক ওই নারীকে নিয়ে ওপরে চলে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যুবকরা বেরিয়ে গেলেও ওই নারীকে নামতে দেখা যায়নি।
র্যাব জানায়, এই ফুটেজ থেকে দুজনকে শনাক্তের পর ওই নারীকে তাদের ছবি দেখানো হয়। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন।
কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই নারী মামলা করবেন। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’