ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার রাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া, শরীয়তপুর-চাঁদপুর, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মাঝনদীতে আটকা পড়েছে বেশ কয়েকটি ফেরি। ঘাটে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।
দুর্ঘটনা এড়াতে রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারি ব্যবস্থাপক খোরশের আলম জানান, রাত ১২টা থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে ফেরি বন্ধ রাখা হয়।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাতে হঠাৎ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। এ জন্য নৌরুটে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
‘একটি ফেরি মাঝ নদীতে আটকে আছে। কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হবে।’
এ দিকে ফেরি বন্ধ থাকায় তৈরি হয়েছে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট।
সকাল ৭টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়লান্দ বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত গাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে চেয়ারকোচ পরিবহণ, ট্রাক, প্রাইভেটকার, পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন। প্রচন্ড শীত ও কুয়াশায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
ঈগল পরিবহনের যাত্রী মোহাম্মদ ইউসুফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যশোর থেকে গতকাল দুপুরে গাড়িতে উঠেছি। রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে এসে জ্যামে পড়েছি। এখন ফেরি বন্ধ কখন ছাড়বে জানি না।
‘প্রচন্ড শীতে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। আমার ৩ বছরের মেয়ে আছে সাথে। ও শীতে কষ্ট করছে।’
মাছ ব্যবসায়ী আশিক সরদার জানান, তিনি ফরিদপুর থেকে ট্রাকে করে মাছ নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। ঘাটে এসে রাত ১০টা থেকে আটকে আছেন। দ্রুত পৌঁছাতে না পারলে মাছগুলো মারা যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই চিন্তিত।’
এদিকে রাত ২টা থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে ফেরি চলাচল।
বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌরুটে ৪টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছিল। কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় রাত ২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।’
‘ঘাট এলাকায় তিন শতাধিক ছোট যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। তীব্র স্রোত আর পদ্মা সেতু নিরাপত্তার স্বার্থে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বেশ কিছুদিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
ঘন কুয়াশার কারণে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথও।
নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ঘাট ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন জানান, ঝুঁকি এড়াতে নদীর চ্যানেলে তিনটি ফেরি নোঙর করা আছে।
তিনি বলেন, ‘ভোর থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। তবে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দৃষ্টি সীমার নিচে নেমে যাওয়ায় ঝুঁকি এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শরীয়তপুর প্রান্ত থেকে যানবাহন নিয়ে ছেড়ে যাওয়া তিনটি ফেরি নদীর চ্যানেলে নোঙর করে রাখা হয়েছে।’
ঘাটে অর্ধশতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও ঘাট ব্যবস্থাপক জানান। তিনি বলেন, ‘কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে।’